রাজারহাট (কুড়িগ্রাম): ৫ মাস থেকে স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট পাচ্ছে না রাজারহাট উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২০হাজার শিক্ষার্থী। এতে করে বিদ্যালয়গুলোতে কমে গেছে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার। এ অবস্থায় প্রাথমিকে ঝড়ে পড়ার হার কমাতে ও দরিদ্র এলাকার শিক্ষার্থীদের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে দ্রুত স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ।
জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলা নদী বেষ্টিত দরিদ্রতম কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা। এই উপজেলায় ১২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে তিস্তা নদী ভাঁঙ্গন কবলিত ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নে ২০টি,বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে ১৫টি এবং ধরলা নদী ভাঁঙ্গন কবলিত ছিনাই ইউনিয়নে ১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর হার বাড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের পুষ্টির ঘাটতি পুরনে ২০০২ সাল থেকে চালু করা হয় স্কুল ফিডিং কর্মসূচী। এ কর্মসূচীর আওতায় টিফিনের সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৭৫ গ্রাম ওজনের পুষ্টিমান সম্পন্ন এক প্যাকেট করে বিস্কুট দেয়া হত। হঠাৎ করে ৫মাস পূর্বে ১জুন থেকে (করোনা কালীন সময়) অজ্ঞাত কারণে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের চাঞ্চল্যতা ও ক্লাসে মনোযোগ বাড়াতে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালুর দাবি জানান শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দেড় বছর বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার পর গত ১২সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেয়া হয়। বিদ্যালয় খোলার পর প্রথম দিকে শিক্ষার্থীর হার একটু বেশি থাকলেও স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট না দেয়ায় দিনে দিনে কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
স্কুল ফিডিং কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় উপজেলায় প্রাথমিকে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার কমেছে ২০ থেকে ২৫ ভাগ পর্যন্ত। এ অবস্থায় দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালু করা হলে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার বাড়ার পাশাপাশি ঝড়ে পড়ার হার কমে আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার আলহাজ্ব তাজুল চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শৌলেন্দ্র নাথ রায় জানান,বিস্কুট বন্ধ করায় শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে যাচ্ছে,একার্যক্রমটি চালু রাখার জন্য আমি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
একই সমস্যার কথা বলেন,উপজেলার খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক ও পুটিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোখলেছুর রহমান। তারা বলেন,শুধু শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যাওয়াই নয়,পুষ্টির ঘারতি পূরনে এই কার্যক্রম চালু রাখা অত্যন্ত জরুরী।
রাজারহাট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন,শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন শারীরিক পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে ক্লাসে মনোযোগী করতে দ্রুত স্কুল ফিডিং কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,এই কার্যক্রম পূনঃরায় চালুর বিষয়ে জেলা কমিটির মাসিক মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে।
আগামীনিউজ/ হাসান