‘বকসিস‍‍’ কম পাওয়ায় অক্সিজেন মাস্ক খুলে নিল কর্মচারী, স্কুলছাত্রের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১০, ২০২১, ০৪:২৩ পিএম
ফাইল ছবি

বগুড়া: বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে বিকাশ চন্দ্র নামে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যুর পর তার স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতাল কর্মচারীকে ‘৫০ টাকা বকশিস কম দেওয়ায়’ তিনি রোগীর অক্সিজেন মাস্ক ‘খুলে নিয়েছিলেন’। 

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রোগীর মৃত্যুতে শহরজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

মৃত বিকাশ চন্দ্র গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুটিমারি গ্রামের বিশু চন্দ্র কর্মকারের ছেলে এবং স্থানীয় স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র।

বিকাশের কাকা শচীন চন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কার্যক্রম শেষ করে অক্সিজেনসহ রোগী বিকাশকে তৃতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়।  হাসপাতালের দুলু নামে এক কর্মচারী রোগীকে ট্রলিতে করে বেডে পৌঁছে দেওয়ার পর ২০০ টাকা বকশিস দাবি করেন। এসময় বিকাশের বাবা ১৫০ টাকা দেন। তাদের কাছে আর কোনো টাকা না থাকার কথা জানালে কর্মচারী দুলু রোগীর মুখ থেকে অক্সিজেন মাক্স খুলে দেয়। এতে ৫ মিনিটের মধ্যে বিকাশ শ্বাসকষ্টে মারা যায়। এসময় অন্যান্য রোগীর লোকজন ওই কর্মচারীর ওপর চড়াও হলে হাসপাতালে কর্মরত আনসারদের সহায়তায় পালিয়ে যান দুলু।’

শচীন চন্দ্র কর্মকার জানান, সংসারে টানাপড়েনের কারণে বিকাশ লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করত। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাইসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিকাশ মাথায় গুরুতর আঘাত পান। 

তাকে সাঘাটা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১০টায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শজিমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম বলেন, ‘রোগীর মৃত্যুর পর সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ তৃতীয় তলায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু পুলিশ পৌঁছার আগেই ওই কর্মচারী পালিয়ে যায়।’ 

শজিমেক হাসপাতালের উপ- পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন,  ‘দুলু কোন সরকারি কর্মচারী নন। মাঝে মাঝে সেখানে ডিউটি করত। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে সে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা প্রহণ করা হবে।’

বগুড়া সদর থানার ওসি সেলিম রেজা বলেন,অভিযুক্ত কর্মচারীকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।

আগামীনিউজ/শরিফ