নোয়াখালীঃ জেলার বেগমগঞ্জ থানাধীন চৌমুহনীতে মন্দিরে হামলা ও পূজার সামগ্রী লুট করার অভিযোগে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাব।
গ্রেফতাররা হলেন- মনির হোসেন ওরফে রুবেল (২৮), জাকের হোসেন ওরফে রাব্বি (২০), মো. রিপন (২১) এবং নজরুল ইসলাম ওরফে সোহাগ (৩৬)।
র্যাব-১১ এর একটি দল ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (৭ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর ডেমরা, নারায়ণগঞ্জের বন্দর এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে মন্দিরের লুণ্ঠিত পূজার সামগ্রী ৭টি পিতলের তৈরি প্রতিমা, ৩টি সিঁদুর কৌটা, ২০টি বাতির কৌটা, ২টি ধূপতি, ৫টি পঞ্চবাতির দানি, ২টি হাত ঘণ্টা, ১০টি স্ট্যান্ডসহ মুছি বাতি, ১টি কুলা, ৫টি পঞ্চ পাতার পল্লব, ১ টাকা মূল্যের ৫৫০টি বাংলাদেশি মুদ্রার কয়েন, ১১টি গ্লাস, ৫টি বাসন, ৭টি ঘটি, ৪টি ইমিটিশনের গলার হার ও ২টি মালা, ৬টি ইমিটিশনের হাতের বালা, ৬ জোড়া ইমিটিশনের কানের দুল, ১টি ইমিটিশনের চেইন, ১২টি বিভিন্ন রকমের চুল বাঁধার কাঁকড়াসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লায় ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করে জনসাধারণের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ অক্টোবর নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানাধীন চৌমুহনী এলাকায় কিছু দুষ্কৃতিকারী শ্রী শ্রী রাধামাধব জিউর মন্দিরে হামলা ও লুটপাট চালায়।
ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বেগমগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা হয়। ঘটনার পর হামলা ও লুটকারীদের শনাক্ত এবং গ্রেফতার করতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
তিনি বলেন, গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার রুবেল, রাব্বি এবং রিপন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে প্রত্যক্ষভাবে হামলায় অংশগ্রহণ করে। হামলা পরবর্তী গ্রেফতার রুরেল, রাব্বি এবং রিপন ২টি বস্তায় করে মন্দিরের পিতলের বিভিন্ন পূজার সামগ্রীসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।
তারা গ্রেফতার সোহাগের সহযোগিতায় ধাতব জিনিসগুলো রুপান্তর করে বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল। মন্দিরে মালামাল লুট করার সময় রুবেলের ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। গ্রেফতার রুবেল, রাকিব, রিপন এবং সোহাগ বিভিন্ন পেশায় জড়িত। রুবেলের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ১টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আগামীনিউজ/নাসির