লক্ষ্মীপুরঃ জেলার রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার বাজারে জেলা পরিষদ পুকুর ভরাট করে অবৈধ ভাবে মার্কেট নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুকুর পাড়ে কথিত উন্নয়ন প্রকল্পের নামে প্রায় ২০০টি দোকান উচ্ছেদ করেছে জেলা পরিষদ। একই ভাবে জেলার রামগঞ্জ ও রায়পুরে পুকুর ভরাট করে মার্কেণ নির্মাণ করে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, দোকান মালিকরা ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভাড়া মেটানোর পরও তাদের দোকান ভেঙ্গেচুরে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়। ভাঙার সময় জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ বিশ্ব ব্যাংকের সুপেয় পানি সরবরাহের প্রকল্পের কথা বললেও বর্তমানে পুকুরের তলোদেশ থেকে ফাউন্ডেশন নিয়ে পাকা মার্কেটের নির্মাণ কাজ চলছে।
বিষয়টি নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা অথবা কে বা কারা কি কাজ করছে তার সঠিক তথ্য মিলছে না কোথাও। উন্নয়ন কাজের কোন দৃশ্যমান সাইনবোর্ডও নেই।
স্থানীয়রা জানান, হাজার হাজার লোক ওজু, গোসল ও নিত্য ব্যবহার্য্য কাজে প্রায় দেড় একর বিশিষ্ট পুকুরটি ব্যবহার করে আসছে। পুকুরটি ভরাট করে জেলা পরিষদ সদস্য আমজাদ হোসেন ও মুজাহিদুল ইসলাম দিদার এর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দোকান বরাদ্দ দেয়ার নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, আমাদের দফতর সেখানে কোন উন্নয়ন কাজ করছে না। কে বা কারা পুকুর ভরাট করে পাকা মার্কেট করছে আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানিনা।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আরোও জানান, জেলা পরিষদ আইন-২০০০ বিধিমালায় উল্লেখিত আইনের ৪৮ এর উপধারা (১) এর (খ) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদের চেয়ারম্যান বা কোন সদস্য বা কোন কর্মচারী তাদের কোন আত্নীয় নিকট অথবা তাহাদের মালিকানাধীন বা তাদের স্বার্থ রহিয়াছে এইরুপ কোন কোম্পানী, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা ব্যক্তির নিকট পরিষদের পরিষদের কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাবেনা।
অথচ আইন অমান্য করে জেলা পরিষদ সেখানে বহুতল ভবন নির্মানের করছে। দোকানের পজিশন দেয়ার নামে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজেদের অর্থে নির্মিত দোকানগুলো হারিয়ে অসহায় ক্ষতিগ্রন্থ দোকান মালিকরা সে জায়গা বিধি মোতাবেক তাদের প্রদান করার দাবী করেন।
এ দিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সহকারী ইউনিয়ন (ভূমি) কর্মকর্তা বলেন, জলাশয় আইনে পুকুর ভরাট করা অবৈধ।
উচ্ছেদকৃত দোকান মালিক লিটন ও জসিম উদ্দিন আহাম্মদ খানসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, অন্যায় ও অবৈধ ভাবে আমাদের উচ্ছেদ করে পুনবার্সনের আশ^াস দেয়ার এখন ইজারা দিচ্ছেনা জেলা পরিষদ। আমরা নিয়মিত সকল ফি, ট্যাক্স, ভাড়া ইত্যাদি পরিশোধ করা হলেও কুটকৌশলে কোটি কোটি টাকা বানিজ্য করে কতিপয় ব্যাক্তিদের অবৈধভাবে পজিশন দেওয়া হচ্ছে।
এ দিকে স্থানীয় জনগণ, ক্ষতিগ্রন্থ ব্যবসায়ী এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আমরা এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করি।
সহকারী কমিশনার ভূমি (রামগতি) আবুল হাসনাত খান জানান, পুকুর কিংবা দিঘি ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ বিষয়টি আমার জানা নেই। ভূমির কোন আইনে নিষেধাজ্ঞা আছে কি না সেটা অফিসে গিয়ে দেখতে হবে। লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম মো: শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, জেলা পরিষদ স্বার্থে ওইখানে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে।
আগামীনিউজ/নাসির