কুড়িগ্রাম: আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহ পোস্টার ব্যানারে আ.লীগের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচারণা শুরু করেছে রাজীবপুর উপজেলায়। তবে নিরব ভূমিকায় আছে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রাত্যাশীরা।
যদিও ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি রাজীবপুর উপজেলায়। এরমধ্যেই আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইউনিয়ন জুড়ে চালাচ্ছেন নির্বাচনী তোড়জোড়। বিশেষ করে দলীয় মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের অনুসারীরা এক্ষেত্রে সক্রিয়া ভূমিকা পালন করছে।
অনেকেই স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের ছবি ও নাম ব্যাবহার করেও প্রচারণা চালাচ্ছে। দলীয় মনোনয়ন পেতে শুরু করেছেন লবিং। প্রচার চলছে ফেসবুকে। পছন্দের মানুষকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চেয়ে ছবিসহ পোস্ট দিচ্ছেন তাদের সমর্থকরা।
সম্ভাব্য আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা এখন থেকেই আটঘাট বেঁধে মাঠে নামছেন। অন্যদিকে, বিএনপি ও জাতীয়পার্টি প্রার্থীদের এখনও নির্বাচন ঘিরে তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
উপজেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায় দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে আমরা ইউপি নির্বাচনে কোন দলীয় প্রার্থী দিচ্ছি না। তবে কেউ যদি নিজ উদ্যোগে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেক্ষেত্রে আমাদের কোন বাঁধা নেই।
উপজেলা জাতীয়পার্টি সূত্রে জানা গেছে যে ইউনিয়ন গুলোতে তাদের প্রার্থীর জনপ্রিয়তা আছে তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।
২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাজীবপুর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ১ টি আওয়ামী লীগ, ১ টি জাতীয়পার্টি ও ১ টিতে জাতীয় পার্টি(জেপি) প্রার্থী জয়লাভ করে।
এবারও দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকের আশায় দলীয় মনোনয়নের জন্য দলের দায়িত্বশীলদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলছে প্রার্থিতার আবেদন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিকটাত্মীয়, শুভানুধ্যায়ী, সমর্থক ও অনুসারী নেতাকর্মীরা ফেসবুকে চালাচ্ছেন প্রচারণা।
বেশিরভাগ নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়েও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জানান দিচ্ছেন ও দোয়া চাচ্ছেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের ফেসবুক আইডি এখন প্রচারণায় মুখর। অনেকেই দলীয় কর্মকাণ্ডসহ নানা তৎপরতার ছবি ফেসবুকে আপলোড দিচ্ছেন। ফেসবুকে ঢুকলেই চোখে পড়ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়ন চাওয়ার আবেদন। অনেকেই নির্বাচিত হলে কি উন্নয়ন করবেন তারও ফিরিস্তি জানাচ্ছেন।
রাজীবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদে আ'লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী গোলাম কিবরিয়া, আতিয়ার রহমান সোহাগ, হারুন অর রশীদ (আলম মিয়া),সিরাজ উদ দৌলা। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সদর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুল আলম বাদল ও হেলাল উদ্দিন। গত নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া মিরন মোহাম্মদ ইলিয়াস এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এছাড়াও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর ই শাহী ফুল এবং উপজেলার একমাত্র নারী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে জেলা পরিষদের সদস্য রাজিয়া সুলতানা রেণু।
কোদালকাটি ইউনিয়নে আ'লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় আছে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ছক্কু, আ.লীগ নেতা আছমত আলী মাস্টার, যুবলীগ নেতা সোহেল সরকার। সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নজরুল ইসলাম জোদ্দার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থীর তালিকায় আব্দুস ছালাম তালুকদার। জাতীয়পার্টি (জেপি) প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আগ্রহ জানিয়েছে, বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন। সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাইফুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন (আনু), সফিউল আলম বিএসসি ও তরুণ ছাত্রনেতা জিয়াউর রহমান (জিয়া) ও আমিনুল ইসলাম সবুজ।
রাজীবপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম বলেন, জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা হয়েছে এ বিষয়ে বিতর্কিত ও বিদ্রোহী কোন প্রার্থী থাকবে না নির্বাচনে। সেভাবেই নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হবে।
রাজীবপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, বিগত সংসদ নির্বাচন গুলো সহ এই সরকারের সময় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হয়েছে। তাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দলীয় ভাবে কোন উৎসাহ নেই। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা চাই।
জাতীয়পার্টির সভাপতি ইব্রাহিম খলিল আকন্দ বলেন, মাঠ পর্যায়ে ভোটারদের মাঝে যে ব্যাক্তির গ্রহণযোগ্যতা আছে তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।
আগামীনিউজ/ হাসান