নীলফামারীঃ টানা বৃষ্টি, উজানের ঢল ও ভারতের গজলডোবার গেট খুলে দেওয়ায় নীলফামারীর ডিমলার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে কমতে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানি। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৮টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে সাময়িক পানি কমলেও নদীতীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের মনে স্বস্তি ফেরেনি এখনো। ভাঙন অব্যাহত আছে। দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। অনেকেই বসতবাড়ি, আবাদি ফসল, মৎস্য খামার হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
বুধবার (২০ অক্টোবর) সকাল থেকে তিস্তায় পানি বেশি থাকায় প্লাবিত হয়েছে আশপাশের নিম্নাঞ্চল। এতে ভেঙে গেছে চারটি বাঁধ। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে প্রায় ১ হাজার পরিবার, আর পানিবন্দি রয়েছে ৩০ হাজার পরিবার।
তবে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এবং আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, তিস্তা নদীর পানি কমে আজকের মধ্যে বিপৎসীমার নিচে নেমে আসবে। পাশাপাশি বৃষ্টিও দুদিনের মধ্যে কমে যাবে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা নেই।
নীলফামারীতে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ করে বিপৎসীমা ৩৩ দশমিক ২ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে তিস্তা নদীর পানি। তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বাড়তে শুরু করলে দিনগত রাত ২টায় তা বিপৎসীমা ৪৮ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে এবং ভোর ৪টায় আরও বৃদ্ধি পেয়ে ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে বুধবার বেলা ১২টা থেকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। বিকেলের দিকে তা বেড়ে বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ওঠে। রাত থেকে কমতে থাকে পানি।
বন্যাকবলিতদের দাবি, আকস্মিক বন্যায় আমাদের সহায়-সম্বল হারিয়েছি। আমাদের আর কিছু রইলো না, আমরা ১৯৯৬ এর পর এ প্রথম এমন বন্যা দেখলাম। আমরা সরকার ও দেশের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা প্রিন্স জানান, সকাল ৮টায় পাওয়া পরিমাপ অনুযায়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে যাচ্ছে। পানি কমতে শুরু করেছে।
তিনি জানান, নতুন করে কোনো বাঁধ ভেঙেছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমাদের লোকজন মাঠে গিয়েছেন। তারা দেখাশোনা করছেন।