রাজশাহী: তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে রাজশাহীতে বর্ষা খাতুন (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রীকে হাতুড়ির আঘাতে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ সভাপতি সাইদুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য গোলাম সারওয়ার, জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদের সহ: সভাপতি সালাউদ্দিন মিন্টু, নগরীর খাদেমুল ইসলাম বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী শিক্ষক সাহানারা ফেরদৌস, মেরিনা আক্তার, মানবাধিকার সংগঠন আইএইচসিআরএফ‘র সাধারণ সম্পাদক সাগর নোমানী, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল করিম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে স্কুলছাত্রী বর্ষার ওপর যেভাবে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, তা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। স্থানীয় প্রভাবশালী মইদুল হক তার মেয়ের বান্ধবীকে হত্যাচেষ্টার ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার পর বর্ষার পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলেও তৎক্ষণাৎ নেয়া হয়নি মামলা। তিনদিন ঘোরানোর পর মামলা রুজু হলেও আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়নি এখনো। অথচ স্কুলছাত্রী বর্ষা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ছুটি পেয়ে বর্তমানে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় বাসায় রয়েছে।
এদিকে আসামীরা এখনো ভুক্তভোগীদের প্রদান করছে হুমকি-ধামকি। এ ঘটনায় বক্তারা অবিলম্বে আসামীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এর আগে, ওই স্কুলছাত্রীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত ২ অক্টোবর আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্ষার মা জরিনা বেগম বাদি হয়ে তিনজনকে আসামী করে এ মামলা করেন।
মামলার আসামীরা হলেন নগরীর হাদির মোড় এলাকার মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মইদুল আলী (৫০), তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৪০) ও মেয়ে মোসা. মাহফুজা (১৫)। এদের মধ্যে মাহফুজা ভুক্তভোগী বর্ষার বান্ধবী। তারা দু‘জনই নগরীর খাদেমুল ইসলাম বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টার দিকে বর্ষা তার খালার বাড়ি যাচ্ছিল। এসময় তার সহপাঠী মাহফুজা ও তার পিতা মইদুল হাতুড়ি নিয়ে এসে পথ আটকিয়ে গালিগালাজ শুরু করে। একপর্যায়ে হাতুড়ি দিয়ে বর্ষার মাথায় আঘাত করে তারা। আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে সে পড়ে গেলে তার পিঠ, পাজর ও গলায় আঘাত করে। পরে তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। কয়েক দফায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পর সবশেষ গত ৭ অক্টোবর ছুটি দেন চিকিৎসক। তবে তার অবস্থা এখনো স্বাভাবিক নয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মইদুল ইসলাম বলেন, আমি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত নই। তুচ্ছ ঘটনায় স্কুলে দুই বান্ধবীর মনোমালিন্য হয়েছিল। তবে তা মিটে গেছে।
এ ব্যাপারে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, যথাসময়ে মামলা নেয়া হয়েছিল। আসামীরা জামিনে থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করার প্রয়োজন হয়নি। তবে আদালতের নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আগামীনিউজ/ হাসান