মানিকগঞ্জ: জেলার হরিরামপুরসহ সারা দেশে একসময় ভোর থেকে রাত পর্যন্ত গ্রামীণ পল্লীতে বাঁশ কেটে চটা তৈরি করে কুলা, চাটাই, চাঙারি, টুকরি, ওড়া, ডালা, চালুনি, মাছ রাখার খালই, ঝুড়ি ও হাঁস-মুরগির খাঁচাসহ বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা হতো। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজে সহায়তা করতো। আর হাটবারে স্থানীয় বাজারে এসব বাশেঁর তৈরি জিনিস বিক্রি হতো।
একসময় বাড়ি বাড়ি ফেরি করে এসব বাঁশ-বেতের পণ্য বিক্রি হতো। সময় গড়িয়েছে এ শিল্পের মূল উপকরণ বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি, আয় কমে বাঁশ-বেতের কারিগররা তাদের পেশা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। অনেকেই আবার এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।
বাঁশ আর বেতের তৈরি জিনিসের চাহিদা কমে প্লাস্টিকের পন্য অনেকের ঘরে ঘরে। তাদের আয়ও কমে গেছে।
শনিবারের সাপ্তাহিক ঝিটকার হাটে মানিকনগর গ্রামের শ্রীদাম মনিরীশি- ৫ টি খালই, ৫ টি ঝাকা নিয়ে এসেছেন। তিনি জানান, ৪০ বছর ধরে পারিবারিক পেশা হিসেবে বাঁশ আর বেতের কাজ করে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। ২ ছেলে মেয়ে তার। স্ত্রী সহায়তা করে থাকেন। এখন আয় কমে গেছে বাঁশ, বেতের পরিবর্তে মানুষ প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহার বেশি করে।
ঘিওর উপজেলার মাশাইল এলাকা থেকে ঝিটকা হাটে এসেছেন ফনি রায়। মাছ ধরার ১০ টি পলো নিয়ে হাটে এসেছেন। আগের মতো আয় নেই বলে জানান তিনি।
হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলের লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন থেকে মাছের ঝাকা(ঝুরি) কিনতে এসেছেন জামাল হোসেন। তিনি বলেন, মাছ ধরে সংসার চালাই। বছরে দুই তিনবার ঝাকা (ঝুরি) কেনা লাগে। ঝিটকার হাটে বেশি পাওয়া যায়, দাম ও কম।
বৈকা গ্রামের বাবলু বলেন, মাছের খালোই কিনতে আইছি। দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। এখনো কেনা হয়নি।
ঝিটকা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ঝিটকা বাজারে আমাদের এলাকা ছাড়াও ফরিদপুর, ঢাকার দোহার- নবাবগঞ্জ - ধামরাই উপজেলার ক্রেতা বিক্রেতারা আসেন। ঝিটকার হাটে বাঁশের তৈরি জিনিসের কদর রয়েছে। লাখো টাকার বেশি বাঁশ, বেতের তৈরি জিনিস বিক্রি হয়ে থাকে এ হাটে।
আগামী নিউজ/ হাসান