১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষিকার পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১, ১০:৪৫ এএম
ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। ছবিঃ সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জঃ জেলার শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন তার ওপর অর্পিত ৩টি পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে রবি পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান পদ, সহকারী প্রক্টর পদ ও প্রক্টরিয়াল বোর্ডের সদস্য পদ থেকে লিখিতভাবে পদত্যাগ করেছেন।

রবির রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল এ পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণ বা পদত্যাগ না করায় শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। সেই সঙ্গে তারা ৪দফা থেকে সরে এসে এখন এক দফা আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, ক’দিন ধরেই ছাত্রদের চুল বড় রাখার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন প্রক্টর। যে কারণে বেশিরভাগ ছাত্র চুল ছোট করে ফেলেছিলেন। তবে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় শিক্ষার্থীরা দেখতে পান যে, গেটে কাঁচি হাতে দাড়িয়ে আছেন প্রক্টর। এসময় যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা যায়, তাদের মাথার সামনে থেকে  বেশ খানিকটা চুল কেটে দেন তিনি। একে একে ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কাটা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি ব্যাপক ভাইরাল হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান তুহিনকে তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ করেন ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কারের হুমকি দেন। এতে ভয়ে তুহিন সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৭টার দিকে দ্বারিয়াপুরের শাহমুখদুম ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে দরজা বন্ধ করে ঘুমের বড়ি সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। রাত ৮টার দিকে তার সহপাঠীরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা এখনও আশংকাজনক বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাতেই রবি ক্যাম্পাসে ছুটে এসে বিক্ষোভ করেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাদের এ বিক্ষোভ চলে। পরে মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা আবারও বিক্ষোভ শুরু করলে রবি ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে।

এ বিষয়ে রবির অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ ও রবির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষিকা ইয়াসমিন বাতেন মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।