দিনাজপুরঃ সন্ধ্যায় বসল পুতুলের বিয়ের আসর। লাজে রাঙা হলো 'কনে বউ' তিতলি সরকার পিও এর মালাবদল হলো তিষান সাহার সঙ্গে। তাদের ঘটকালির কাজটা করেছিলেন দুই পরিবারের আত্মীয়রা।
সোমবার রাতে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের কাঁটাবাড়ী গ্রামে ছাদনাতলায় বিয়ে হয় তিতলি আর তিষানের। এই বিয়ের আসরে এলাকার কচিকাঁচাসহ প্রায় ১০০ জন অতিথি নিমন্ত্রিত ছিলেন।
কনেকে সম্প্রদান করেছেন মেয়ের মা কাঁটাবাড়ী গ্রামের জি এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী শ্রাবন্তী গুপ্তা। পাত্রকে কোলে নিয়ে বসে ছিলেন ছেলের মা একই গ্রামের বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রুমঝুম। বিয়েবাড়িতে ছিল একেবারে খাস বিয়ের ছাপ। অতিথিদেরও আপ্যায়িত করা হয়।
বিয়ের শুরুটা অবশ্য কয়েক দিন আগেই। শ্রাবন্তী ও রুমঝুম খেলার ছলে হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নেয় তারা তাদের দুই পুতুলের বিয়ে দেবে। তারপর দুই বাড়ির সম্মতিতে পুতুলের বিয়ের এই আসর। শুক্রবার আশীর্বাদ, রবিবার সকাল থেকেই রীতি মেনে হয়েছে অধিবাস, তারপর হলুদ কোটা, জল সইতে যাওয়া, বর-কনের গায়েহলুদ স্নানের পরে সোমবার রাতে ধুমধাম করে সানাইয়ের সুরে বিয়ের আসর।
কাঁটাবাড়ী গ্রামে মেয়ের বাড়িতে সাজানো হয় বিয়ের আসর, রাত সাড়ে ৯টায় মাইক্রোবাসে করে বাজনা নিয়ে কনেবাড়িতে আসেন বরযাত্রী। বরযাত্রীদের বরণ করে কনেপক্ষ। ধর্মীয় আচার অনুযায়ী পণ্ডিত মশাই শুরু করেন বিয়ে। পণ্ডিত হিসেবে ছিলেন শুভ নামে এক যুবক। এভাবে শেষ হয় বিয়ের কার্যক্রম।
এদিকে পুতুল বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ভিড় জমতে থাকে বিয়েবাড়িতে। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
অভিভাবকরা বলেন, আমরাও আমাদের ছেলেবেলায় পুতুল খেলেছি, যা খুব আনন্দের ছিল। সেই সময় আমরা কত পুতুলের বিয়ে দিয়েছি। জামাই এসেছে। সেই উপলক্ষে খাওয়াদাওয়া হয়েছে। আহা শৈশব!
তারা বলেন, এই পুতুল বিয়ের মধ্য দিয়ে বাচ্চারা একদিকে যেমন আনন্দ পাচ্ছে, আপরদিকে তাদের একে আপরের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন হচ্ছে।