নৌ-পুলিশ কর্তৃক জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

রাসেল কবির মুরাদ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১, ০৮:২৪ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

পটুয়াখালিঃ জেলার কলাপাড়ায় জেলেকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি, প্রশাসন-জেলে দু’পক্ষই দিচ্ছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। মো: সুজন হাওলাদার (৩২) নামে এক জেলেকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে । 

মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোট ঢোস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর উত্তেজিত শতাধিক জেলেরা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে।

নিহত সুজন হাওলাদরের বাড়ী উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের চর বালিয়াতলী গ্রামে। সে ওই এলাকার সত্তার হাওলাদরের ছেলে।

বিষয়টি জানতে কলাপাড়া থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক মো: শওকত জাহান কে তার মুঠো ফোনে কল করলে তিনি বলেন তিনি ঘটনাস্থলে রয়েছেন এ বিষয়ে তথ্য দেয়া যাবে না । তবে বিকেল ৪ টার দিকে তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে, এ ঘটনার জন্য স্থানীয় জেলেরা লালুয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ উপ-পরিদর্শক মামুনের নেতৃত্বে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী করেছেন। ছোট ঢোস এলাকার নদীতে মাছ শিকারের প্রস্তুতির সময় পুলিশের মারধরে জেলে সুজন অসুস্থ হয়ে পড়ে । এসময় অন্য জেলেরা তাকে উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পথে বাবলাতলা বাজার এলাকায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতশত জেলে ও স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা ওই পুলিশ উপ-পরিদর্শক মামুনসহ চার পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে ।

এ ব্যাপারে জেলে আবুল হোসেন, বেল্লাল, আবু সুফিয়ান এ প্রতিনিধিকে জানায়, ওই নদীতে মাছ শিকার করতে পুলিশকে মাসোয়ারা দিতে হয় । মাসোয়ারা না দেয়ায় সুজনকে এলাপাথাড়ি মারধর করে ।

অভিযুক্ত পুলিশ উপ-পরিদর্শক মো: মামুন এ প্রতিবেদককে বলেন, তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত জেলে সুজন হাওলাদারকে জালের উপর শুয়ে থাকা অবস্থায় দেখেছেন। কোন পুলিশ সদস্য তাকে মারধর করেনি।

কলাপাড়া থানার (ওসি) তদন্ত মো: আসাদুর রহমান সাংবাদিকদের জানায়, লাশ ময়না তদন্ত রিপোর্টের পর প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এবিষয়ে বালিয়াতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো: হুমায়ুন কবির গনমাধ্যমকে বলেন, খবর শুনে ঘটনা স্থলে গিয়েছি। জেলেদের কাছে শুনেছি, পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে, চারজন পালিয়ে যায়। সুজনকে ধরে মারধর করলে সে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মো: মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানায়, তিনি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। দায়িত্বে ওসি তদন্ত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় জেলে ও সাধারন মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।