জনপ্রতিনিধিরা উদ্যোগ না নেওয়া

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো

রুহুল সরকার, রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১, ০৫:৩০ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

কুড়িগ্রামঃ সম্প্রতি বন্যায় উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগের সড়কটি ভেঙে যায়।এতে চলাচলের দূর্ভোগ পোহায় রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের জোয়ানেরচর সহ কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ।

স্থানীয়রা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে অবহিত করলেও তারা কার্যকর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করে নি। তাই এলাকাবাসী ও নিজেদের দূর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় তরুণরা মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের জোয়ানেরচর গ্রামে স্বেচ্ছায় তৈরি করছে বাঁশের সাঁকো।

স্বেচ্ছা শ্রমে তৈরি এই সাকোঁ নির্মানে স্থানীয়রা দিয়েছেন বাঁশ, কেউ পেরেক, কেউবা শারীরিক শ্রমে দিয়ে তরুণদের সহযোগিতা করেছেন। তরুণ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর চেষ্টায় ১৫ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট বাঁশের সাঁকো নির্মান সম্পন্ন হয়েছে। এতে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে স্বস্তি মিলছে। যাতায়াতে দূর্ভোগ কমেছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজীবপুর উপজেলা শহরের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে জোয়ানেরচর, পাটাধোয়াপাড়া, সহ আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষজন চলাচল করে। এছাড়াও রাজীবপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, রাজীবপুর সরকারী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা এই পথে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। সম্প্রতি স্কুল কলেজ চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছিল ওই ভাঙ্গা সড়কে চলাচলের সময়। 

এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দেখে জোয়ানের চর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী সোহেল রানা(২২) সড়কের ওই ভাঙ্গা অংশে সাঁকো নির্মানের চিন্তা করে স্থানীয় আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে। তার প্রস্তাবে সাড়া দেয় রাসেল(১৮), আব্দুল মান্নান(২০), ইউসুফ (১৫) সহ আরও কয়েকজন।পরে ওই গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম ও আব্দুল লতিফের সহায়তায় শুরু হয় বিভিন্ন বাড়ি থেকে বাঁশ সংগ্রহ। 
 
বাঁশ সংগ্রহ শেষ হলে শুরু হয় সাঁকো নির্মান কাজ। তরুণদের দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকাবাসীও সহযোগিতা শুরু করে নির্মান কাজের। প্রায় ৩০ জনের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় নির্মান হয় ১৫ ফুট বাঁশের সাঁকো।

সাঁকো নির্মান হওয়ায় খুব খুশি জোয়ানের চর গ্রামের নুরুন্নবী (৫৫)। তিনি বলেন, ‘সড়কটা ভাইঙ্গা আমাগো চলাচলের খুব অসুবিধা হইছিলো।গ্রামের যুবকরা বাঁশের ব্রিজ বানাইছে এহন একটু সুবিধা হইলো চলাফেরায়।’ দ্রুত এই সড়কটি স্থায়ী সংস্কারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি। 

সাঁকো নির্মানের মূল উদ্যোক্তা সোহেল রানা বলেন, ‘মানুষের চলাচলের দূর্ভোগ লাঘবে আমরা তরুণরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করি।এতে গ্রামের অনেকেই সহযোগিতা করেছেন।সকলের পরিশ্রমের ফলেই আজ এই সড়কের ভাঙ্গা অংশে সাঁকো নির্মান হয়েছে।এতে শিক্ষার্থী সহ নানা পেশার মানুষের দূর্ভোগ লাঘব হয়েছে।’ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দ্রুত সড়কের ওই ভাঙ্গা অংশ মেরামত করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। 

মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, ‘ওখানকার স্থানীয় কিছু ছাত্র ও এলাকাবাসী মিলে একটি অস্থায়ী সাঁকো নির্মান করেছে। এতে চলাচলে সাময়িক  সুবিধা হয়েছে।’ তিনি সড়কটির ক্ষতিগ্রস্থ অংশ মেরামতের জন্য উপজেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন জানানো হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন।