অধিকাংশ অভিভাবক দ্বিধাদ্বন্ধে      

শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আবারও মুখরিত হবে রাঙ্গামাটির স্কুল কলেজগুলো

নিউটন চাকমা,রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১, ০৩:০৬ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

রাঙামাটিঃ  দীর্ঘ দেড় বছর পর কোভিড-১৯ করোনা বৈশ্বিক মহামারিতে বিগত ২৬মার্চ '২০ইং সাল হতে বন্ধ হয়ে যাওয়া আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে রাঙামাটি জেলাতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে মরিয়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জেলার  সকল প্রাইমারি, উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে ধোঁয়া মুছা এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ। চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার বেষ্ঠনী তৈরীর কাজ। তবে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে প্রাইমারি বিদ্যালয়ের কোভিড-১৯ এ নিরাপত্তা ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। এমনকি কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।  

রাঙামাটির সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, দেবাশিষ নগর সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদেরকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক করোনা মহামারির প্রার্দুভাব থেকে রক্ষার্থে হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্থাপন, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখাসহ বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষের চেয়ার টেবিল ও বসার বেঞ্চ সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে মাকড়সার আঁচগুলো পরিস্কার করতে দেখা যায়। কিছু কিছু বিদ্যালয়ের সাদা রংয়ের গোল চিহ্নিত দ্বারা সামাজিক দুরত্বের চিহ্ন দেখাগেছে।

আগামীকাল ১২সেপ্টেম্বর থেকে সরকারের নির্দেশ অনুসারে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হওয়ার বিষয়ে প্রাইমারি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে আলাপকালে জানান, সরকারের নির্দেশ মোতাবেক বিদ্যালয় চালুর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ হচ্ছে প্রাইমারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে দেখাশুনা করা। তারা এখনো অনেকে জানেনা করোনা কি জিনিস। সুতরাং তাদেরকে চোখে চোখে রাখাটা খুবই মুশকিল হবে। তবে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদেরকে এতকিছু বোঝানো দরকার হবেনা। কাজেই তাদেরকে একটু বুঝালেই তারা সহজেই বুঝতে পারবে।

এদিকে অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, দেশে এখনো সেই পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। তাছাড়া আমাদের দেশে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এখনো অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। তবে অনেকে স্কুল চালুর বিরোধীতা করেছেন। অভিভাবকরা আরো বলেছেন, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই করোনা প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে। কেননা, বিদ্যালয়ের প্রাইমারি শিক্ষার্থীরা তারা এখনো করোনাকে চিনতে পারেনি। যেজন্য শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই আমাদের (অভিভাবকদের) শরীরে করোনার জীবানু সংক্রমণের আশংকা রয়েছে বলে অনেকের মনে আতংকের বিরাজ করছে বলে অধিকাংশ অভিভাবকরা জানিয়েছেন।

সদর উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানাগেছে, সরকার ও কোভিড-১৯ টেকনিক্যাল কমিটির নীতি নির্ধারকদের তথ্য অনুসারে আগামীকাল ১২সেপ্টম্বর থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক অবস্থায় চালু হতে যাচ্ছে। তবে রাঙামাটি জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া আছে বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার বাধ্যতামুলক ব্যবহার করা এবং নির্দিষ্ট দূরত্বে একজন আরেকজন থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সবকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারপরও জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তদারকি করবে। যদি কোন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব না মানেন তাহলে সরকারের নির্দেশানুসারে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।      

এদিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী সঙ্গে কথা বলে তারা জানান, অনেকদিন পর স্কুল খুলছে, খুব ভালো লাগছে। সবার সাথে দেখা ও কথা হবে। অনেকদিন ধরে শুধু ফোনে কথা বলেছি কিংবা পাবজি-ফ্রিফায়ার গেমের মাধ্যমে কথা বলেছি। কিন্তু এখন স্কুলে সরাসরি দেখা হচ্ছে বলে মন উরু উরু হয়ে গেছে। আশা করছি শীঘ্রই আগের মতো পুরোদমে সবার সাথে ফ্রিভাবে কথা বলা উম্মুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন।

বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আগমনে ও পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে মেলবন্ধন প্রসারিত ঘটবে এবং সহপাঠী সকল বন্ধুদের মধ্যে আনন্দঘন মুহুর্ত ভরে যাবে স্কুল কলেজের সকল শ্রেণীকক্ষ। ফিরে পাবে সেই পুরনো দিনের উল্লাস মুখরিত হয়ে উঠবে এটাই সবার মনে আশাবাদী ও প্রত্যাশা।