নীলফামারীঃ জেলার সৈয়দপুরে আ’লীগকে রাজাকার মুক্ত করার ঘোষণা দিলেন সংরক্ষিত আসনের এমপি রাবেয়া আলীম।
শুক্রবার(১০ সেপ্টেম্বর) রাতে শহরের একটি কনভেনশন সেন্টারে ওই ঘোষণা দেন তিনি। এদিন পৌর আ’লীগের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ওইসব কথা বলেন।
এমপি রাবেয়া আলীম তার বক্তব্যে আরও বলেন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দলে বা সহযোগী সংগঠনে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী বা তাদের উত্তরসুরীদের ঠাই হবে না। সেই নির্দেশনা মানতেই পৌর আ’লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদকের পদ থেকে কুখ্যাত রাজাকার পুত্র দিলনেওয়াজ খানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই বহিষ্কারাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটি যাতে দ্রুত কার্যকর করে সেই আলোকেই আমি কাজ করে যাব।
তিনি বলেন, রাজাকার, আলবদর, আল সামস্ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীরা আ’লীগে বা সহযোগী সংগঠনে থাকবে তা কখনই মেনে নেওয়া সম্ভব না। যারা ৭১ সালে স্বজন হারিয়েছেন তারাই ব্যথা বুঝেন। যাদের স্বজন স্বাধীনতা যুদ্ধে মরে নাই তারা মরণের ব্যথা কিভাবে বুঝবে। এ কারণে স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে যেসব নেতা হাত মিলিয়ে চলছেন তাদেরও দলে ঠাই হবে না। এটি মানবতার মা শেখ হাসিনার নির্দেশ।
পৌর আ’লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভা হয়। উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শহীদ সন্তান মহসিনুল হক মহসিন ওই সভায় উপস্থিত থেকে তার বক্তব্যে বলেন, আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনকে রাজাকার মুক্ত করতে প্রয়োজনে ৭১ সালের মতো আরো একটি মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। এ যুদ্ধের জন্য সবাইকে থাকতে হবে প্রস্তুত। দলে অনুপ্রবেশকারী রাজাকার পুত্র দিলনেওয়াজ খান গায়ে আ’লীগের লেবেল লাগিয়ে ভাষা ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর যে জুলূমবাজী করছে তা বরদাস্ত করবে না বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা। তাই দলকে রাজাকার ও রাজাকার লালনকারীদের প্রতিহত করতে শেখ হাসিনার নির্দেশনাকে বাস্তব রূপ দিতে প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীরা আবারও জীবন দিবে। তবুও শেখ হাসিনার নির্দেশনা পালন থেকে এক চুলও সরবে না।
পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক মতবিনিময় সভায় বলেন, ছাত্রলীগের দুর্দিনের কান্ডারী কেন্দ্রীয় আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নামে রাজাকার নঈম খানের পুত্র দিলনেওয়াজ খান নিরীহ উর্দুভাষী ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে চাঁদাবাজী করবে, তা আ’লীগ কখনও মেনে নেবে না। ওই দিলনেওয়াজ খানের নের্তৃত্বে সারা উত্তরাঞ্চল মাদকে ছেয়ে গেছে। মাদক ব্যবসার টাকা দিয়ে সে আ’লীগের দুই একজন নেতাকে কিনে শহরের ডন হতে চাইছে। এ স্বপ্ন তার কখনও বাস্তবায়ন হবে না। এখন থেকে প্রকাশ্যে রাজাকার বিরোধী লড়াই শুরু হবে। আর তাদের মদদদাতারাও যেন হুশিয়ার থাকেন।
আ’লীগ নেতা ও মহিলা এমপির মুখপাত্র প্রকৌশলী একেএম রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির সঙ্গে কোন আপোষ নেই। যতদিন দল রাজাকারমুক্ত হবে না ততদিন আমাদের লড়াই চলবে। মহিলা আ’লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জু আরা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যে কায়দায় রাজাকাররা নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন করেছে ঠিক একই কায়দায় রাজাকার পুত্র দিলনেওয়াজ খান নারীদের ওপর নিপীড়ন করছে। দিলনেওয়াজের শরীরে বইছে খাটি রাজাকারের রক্ত। সেই রক্ত কখনও পরিশোধন হতে পারে না। তাই তার বহিষ্কারাদেশ দ্রুত কার্যকর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জিকো আহমেদের সঞ্চালনায় এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য বলেন অধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খোকন, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ভিপি মোস্তাফা ফিরোজ, সাবেক পৌর কাউন্সিলর সরকার মোঃ কবির উদ্দিন ইউনুস, কৃষকলীগ সভাপতি জয়নাল আবেদীন, মৎস্যজীবী লীগ পৌর শাখার সভাপতি ঈসা মিঠু প্রমুখ।