নারায়নগঞ্জঃ বিদ্যুৎ যায় আর আসে না। আকাশে মেঘ ডাকলেতো কথাই নাই। ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎহীন থাকে রূপগঞ্জের মানুষ। রাতের বেলায়ও ৪/৫ বার লোডশেডিং হচ্ছে। এত লোডশেডিংয়ের পরও ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ট মানুষ। কিছুতেই ভুতুড়ে বিল আর লোডশেডিং থেকে নিস্তার পাচ্ছে না মানুষ। এমপি মন্ত্রী চেয়ারম্যান মেম্বার কেউ এটা দেখে না। কারো কাছে প্রতিকার পাচ্ছে না ভোক্তভুগি সাধারণ মানুষ।
রূপগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং যেন গ্রামের মানুষের নিত্যসঙ্গী হয়েছে। কোনোভাবেই থামছে না পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং। দিন দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ছে অথচ বিতরণ কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতা করছে লোডশেডিংয়ের। এ যেন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- এখন লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে। প্রতিদিনই গড়ে ১০-১২ বার করে বিদ্যুৎ যাচ্ছে।
জিল্লুর রহমান একজন ভোক্তভুগি। তিনি বলেন, আগে ঘোষণা দিয়ে মাঝে মধ্যেই ৮-৫ টা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখত। এখন আর ঘোষণাও দেয় না। যখন তখন বিদ্যুৎ বন্ধ কওে দেয়। গরমে হাসপাস কওে শিশু বৃদ্ধসহ সকল শ্রেণির মানুষ। রাতের ২/৩ টার সময়ও লোডশেডিং দেয়। ২/৩ ঘন্টা একটানা বিদ্যুৎ থাকে না। আর আকাশে কালো মেঘ দেখলেই লাইন বন্ধ কওে দেয়। এত লোডশেডিংয়ের পরও ভুতুওে বিলের কারণে অতিষ্ট মানুষ। দ্বিগুণ তিনগুণ বিলও কওে তারা। আগে তো এমন ছিল না। নতুন ডিজিএম আসার পরই এ অবস্থা। স্থানীয় ভোক্তভুগিরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের কাছে এর প্রতিকার চাচ্ছে।
স্থানীয়রা বলেছেন, একটি চক্র মূলত সরকারের বিরুদ্ধে মরণ খেলায় মেতেছে। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি দেশব্যাপী বিদ্যুতের সাব স্টেশনগুলোও আপগ্রেড করছে। প্রতিটি প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। কিন্তু এর সুফল ঘরে তুলেতে পারছে না বিদ্যুতের বিতরণ কোম্পানিগুলোর দুর্নীতি, লুটপাট আর ষড়যন্ত্রের কারণে।
গত আগষ্ট মাস থেকে চলতি মাসে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ বার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে রূপগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতে।
স্থানীয় ইলিয়াস আলী বলেন- বিদ্যুৎ চলে গেলে কখন আসবে তা কেউ জানে না। আকাশে মেঘ হলেও অনেক সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। কখনও ১৫ মিনিট আবার কখনও দু-চার ঘণ্টা। সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ নাই এলো হয়তো অনেক রাতে। এইভাবেই চলছি আমরা। স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিলে কখনো ব্যাস্ত কখনো বন্ধ বলে মাঝে মধ্যে ফোন রিসিভ হলে তারা নানা রকম অজুহাত দিতে থাকে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষই শুধু ভোগান্তির শিকার হয়।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) লাবিবুল বাশার বলেন, প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও গাড়ীর ধাক্কায় খুঁটি ভেঙ্গে যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ণ কর্মকান্ড করতে গিয়ে তার ছিঁড়ে ফেলছে। জাতীয় গ্রিডে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষ হলেই আমরা বিদ্যুৎ বিতরণ সঠিকভাবে করতে পারবো।
উপজেলায় বিদ্যুৎ চাহিদার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাদের উপজেলায় বিদ্যুৎ এর চাহিদা ও উৎপাদন ঠিকই আছে। স্থানীয় সমস্যার জন্যই উপজেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ কাভার করাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবে এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। খুব দ্রুতই সমধান হয়ে যাবে।