নওগাঁঃ জেলার মহাদেবপুরে কিশোরীকে অপহরণ করে রাতভর ধর্ষণ। এ ঘটনায় থানায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন ওই কিশোরীর পরিবার। আসামীরা ঘুরছেন প্রকাশ্যে, দিচ্ছেন বাদীকে প্রাণ নাশের হুমকি। পুলিশ বলছেন আসামীদেরকে নিয়ে যাচাই বাছাই চলছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সত্যতা পেলে তবেই তাদেরকে আটক করা হবে। আর আইনজীবী বলছেন এজাহার ভুক্ত আসামীদেরকে নিয়ে পুলিশের যাচাই বাছাই করার কোন সুযোগ নেই। পুলিশ মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করতে পারবেন আসামীদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য বা মিথ্যে।
মামলা সূত্রে জানাযায়, গত ১৯ জুলাই সকাল সাড়ে ১১ টার সময় ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ওই কিশোরী বিদ্যালয়ে এ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার এনায়েতপুর উনিয়নের কালুশহর মোল্লাপাড়া গ্রামের ভবেশ রবিদাস এর ছেলে প্রদীপ রবিদাসসহ তার ৩ সযোগী জোর পূর্বক সিএনজিতে উঠিয়ে অপহরণ করে ধামইরহাট উপজেলায় প্রদীপ তার আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সেখানে ওই কিশোরীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক রাতভর ধর্ষন করে এবং ২০ জুলাই ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় লোকজন কিশোরীকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে বুঝিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় গত ২১ আগস্ট (শনিবার) ওই কিশোরীর বাবা তার কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণ করার অভিযোগে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে প্রদীপ রবিদাসসহ চার জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রেক্ষিতে পরের দিন (২২ আগস্ট) প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হলেও এখনো বাঁকি ৩ আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেননি পুলিশ। ওই আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরা-ফিরা করছে। এবং মামলার বিবাদীকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন মামলা উঠে নেয়ার জন্য। অভিযোগ রয়েছে আসামীরা অর্থমান হওয়ায় পুলিশকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে ঘুরছেন তারা।
কিশোরী জানান, আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরা-ফিরা করছেন। পুলিশ তাদেরকে ধরছেন না। পুলিশ না ধরার তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন। মামলা উঠিয়ে না নিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছেন। এ অবস্থায় আমি বাড়ি থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছি।
কিশোরীর মা আরা জানান, আমার মেয়ের উপর যে অন্যায় হয়েছে তার বিচার চেয়ে থানায় একটি মামলা করে বিপাকে পড়েছি আমরা। এখন বিচারতো পাচ্ছিই না উল্টো আমরা বিপদে রয়েছি। মেয়েকে আত্মিয়ের বাড়িতে রেখে এসেছি। এর পরও আমার মেয়েকে নিয়ে ও আমার পরিবারকে নিয়ে দু:চিন্তায় রয়েছি।
মামলার তদন্তকারী অফিসার মহাদেবপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর, মো: আব্দুল খালেক বলছেন, মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাঁকি আসামীদেরকে নিয়ে যাচাই বাছাই চলছে। তারা প্রকৃত পক্ষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে তবেই তাদেরকে আটক করা হবে।
তবে আইনজীবী নওগাঁ জেলা এ্যাডভোকেট বার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: সরদার সালাউদ্দীন মিন্টু বলেন, মামলা হবার পর পুলিশের প্রথম দায়িত্ব আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা। এর পর পুলিশ মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করতে পারবেন আসামীদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য বা মিথ্যে বলে।