জাতির পিতার ঘনিষ্ঠ সহচর কক্সবাজারের নুরুল ইসলাম আর নেই

জাফর আলম, কক্সবাজার প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১, ১১:১৪ এএম
ফাইল ছবি

কক্সবাজারঃ বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম আর নেই। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর )রাত পৌনে ৯টায় চট্টগ্রাম শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে তার ছেলে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম জানান। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৯১ বছর। তার তিন ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য স্বজন-গুণগ্রাহী রেখে যান।

মরহুমের ছেলে নজিবুল ইসলাম জানান, গত ২৩ অাগস্ট বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বাবাকে চট্টগ্রাম শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টায় সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

তিনি জানান, রাত ১১টায় চট্টগ্রাম শহরে কাতালগঞ্জ জামে মসজিদে প্রয়াতের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে শেষ নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাকে কক্সবাজার শহরের বইল্ল্যা পাড়া কবরস্থানে পিতার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে। কক্সবাজার প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি,কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, কক্সবাজার মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং দৈনিক কক্সবাজার সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে।ত্রিশ দশকে জন্ম নেয়া নুরুল ইসলাম চট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। তিনি কক্সবাজার মহকুমা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। মুক্তিযুদ্ধে সময় কক্সবাজার মহকুমা সংগ্রাম পরিষদের প্রতিনিধি হিসেবে চকরিয়ায় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন । মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠতি করে বিভ্ন্নি ক্যাম্পে ট্রেনিংয়ে পাঠান। রাজাকার আলবদরদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন।

স্বাধীনতার পর কক্সবাজার মহকুমা কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য নির্বাচিত হন। বাকশাল গঠিত হলে কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরো সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ ১৩ বছর জেলা আওয়ামীলীগের সহ- সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শেখ হাসিনাকে কারামুক্ত করতে কক্সবাজার জেলায় গনস্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। মরহুম নুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে পেকুয়া উপজেলার বৃহত্তর মগনামা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিস্ট সহচর এবং প্রিয়ভাজন কর্মী ছিলেন। কক্সবাজার জেলা থেকে প্রথম প্রকাশিত সাপ্তাহিক পত্রিকা সাপ্তাহিক কক্সবাজার এবং সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত কক্সবাজারের প্রথম দৈনিক দৈনিক কক্সাবাজার পত্রিকার সম্পাদক। এছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।এদিকে, তার বড় সন্তান মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক।মেজ সন্তান নজিবুল ইসলাম কক্সবাজার পৌর আওয়াামী লীগের সভাপতি, কনিষ্ঠ সন্তান ড. আশরাফুল ইসলাম সজিব জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক।

বড় কন্যা আশরাফ জাহান কাজল জেলা পরিষদের সদস্য ও মহিলা আওয়াামী লীগ নেত্রী। কনিষ্ঠ কন্যা ফাতেমা জাহান উজ্জ্বল বাহারছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষিকা।মরহুমের ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় আওয়াামী লীগের সদস্য, স্বাধীন বাংলাদেশে কক্সবাজার জেলার সাবেক গভর্ণর এডভোকেট জহিরুল ইসলাম গত বছর ইন্তেকাল করেছেন। এর আগে মারা গেছেন মরহুমের কনিষ্ঠ ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এডভোকেট নজরুল ইসলাম।মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ জাফর আলম, মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাংসদ শাহিন আকতার, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কেন্দ্রিয় আওয়াামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা,কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, কক্সবাজার সদর -রামু আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুরর রহমান, কক্সবাজার প্রেসক্লাব ও কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, সদস্য শাহজাহান চৌধুরী শাহীন সহ সাংবাদিক ইউনয়ন ও প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির সকল সদস্য সহ অসংখ্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ।