ভোলাঃ জেলার দৌলতখান উপজেলার মধ্যমেঘনায় অবস্থিত হাজিপুর ইউনিয়নটি মেঘনার ভাঙনে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। ওই ইউনিয়নের সর্বশেষ স্থাপনা ৫০ নং মধ্য হাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন তলাপাকা ভবনটি মেঘনার ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে। নদীর ভাঙনে ভবনের একেবারে ভীত স্পর্ষ করেছে। যেকোন সময় ভবনটি নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে।
এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ৩১ আগস্ট উপজেলা শিক্ষা বিভাগ তড়িঘড়ি করে উম্মুক্ত নিলাম ডেকে ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় নির্মিত ভবনটি মাত্র ৪০ হাজার টাকায় পাঁচজনের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা মো: আবি আবদুল্লার কাছে বিক্রি করে।
সরেজমিন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইলি কনস্ট্রাাকশন উপজেলা এলজিইডির অর্থায়নে ভবনটি নির্মান করে। এক বছর না পেরোতেই ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে। সঠিক সময়ে ভবনটি নিলাম ডাকের ব্যবস্থা কেন করা হয়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি যথা সময়ে নদীর ভাঙনের তীব্রতা সম্পর্কে অবহিত করেননি। যার কারণে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ভবনটি নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করা যায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রহমানকে ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে ওই চরে গিয়ে দেখা যায় আশ্রয়ন প্রকল্পের সাতটি গুচ্ছগ্রামের ৪২০ টি সরকারি ঘর ও ব্যক্তি পর্যায়ের আরও চার শতাধিক ঘরের কোন চিহ্নই নেই। মেঘনার ভাঙনে আট শতাধিক পরিবারের আবাস স্থল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
জানা যায়, ওই চরে ৭ টি গুচ্ছগ্রামে ২০১৯ সালে আশ্রয়নের ৪২০ টি ঘর নির্মানে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয় হয়। এ ছাড়াও ৭ টি গুচ্ছগ্রামের প্রতিটির জন্য মাটি ভরাটে দেড় থেকে দুইশ মেট্রিকটন গম/চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এখন ওই চরে শুধু বিদ্যালয় ভবনটিই কোন রকমে দাঁড়িয়ে আছে। সেটি নিলামে পাওয়া ব্যক্তির নিয়োজিত শ্রমিকরা হাতুরী সাবল দিয়ে ভাঙছে। গত এক বছরে অবশিষ্ট বাড়ি ঘর সব নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী সিকস্ত হয়ে ওই চরের কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীণ হয়ে পড়েছে। এসব মানুষ এখন বেড়িবাঁধ ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
ওই ইউপির চেয়রম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুর রহমান টিপু নদীর ভাঙনে উদ্বাস্তু হওয়া এসব মানুষের দ্রুত পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের উচ্চ মহলের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।