নারায়ণগঞ্জঃ জেলার সোনারগাঁয়ের বস্তল এলাকায় একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে সরকারী খাল দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ্যাম্পায়ার স্টীল মিল নামের একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে বালু ভরাট করে ওই সরকারী খাল দখলের অভিযোগ উঠে। খাল দখলে ওই এলাকার পানি নিষ্কাষণ বন্ধ হয় যায়। ফলে আশ পাশের ২০ গ্রামের জলাবন্ধতার সৃষ্টির আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এ খাল দখল মুক্ত না হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, জামপুর ইউনিয়নের বস্তল এলাকায় নির্মাণাধীন এ্যাম্পায়ার স্টীল মিল নামের কোম্পানি ওই এলাকায় জমি ক্রয় করে বালু ভরাটের মাধ্যমে কোম্পানি গড়ে তুলছেন। কোম্পানির ক্রয় করা জমি ছাড়াও অসহায় কৃষকের জমি ও পাশ্ববর্তী খাল ও সরকারী হালট দখল করে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করেন। সরকারী পাশ্ববর্তী খাল ৩৩ ফুটের জায়গা দখল করে মাত্র ১০ ফুট রেখে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করেন। ফলে ওই কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক বিএনপি নেতা গোলজার হোসেনকে চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল মাসে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আতিকুল ইসলাম খাল দখলের অভিযোগে তাকে ১ মাসের কারাদন্ড প্রদান করে। কিন্তু কোম্পানির প্রভাবে সে দু’দিন কারাভোগের পর জেল থেকে বেরিয়ে আসে। বিএনপি নেতা গোলাজার হোসেন পুনরায় গত কয়েকদিন ধরে প্রায় দুই কিলোমিটারের দৈর্ঘ্যে ওই খাল তাদের রেখে দেওয়া ১০ ফুটে বালু ভরাট করে দখল করে নেয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায় ২শ বছরের এ খাল দিয়ে নৌকা যোগে মানুষ বিভিন্ন গ্রামে যাতায়ত করতো। বর্তমানে খালটি দখল করে নিয়েছে একটি কোম্পানির পক্ষে বিএনপি নেতা গোলজার হোসেন। ফলে নৌকা চলার তো দূরের কথা এ এলাকার বৃষ্টির পানিও নিষ্কাষণ হবে না। ফলে এ এলাকার জলাবন্ধতার সৃষ্টি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে। এছাড়াও ফসলী জমিতে সেচ বন্ধ হয়ে যাবে।
বস্তল গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া বলেন, নিরীহ কৃষকের জমি কোম্পানির পক্ষে দখলের পাশাপাশি সরকারী খাল ও হালট দখল করে নিয়েছে গোলজার হোসেন। এ কোম্পানিকে অবৈধভাবে খাল দখল করে দিয়ে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দ্রুত এ খালটি পুনঃ উদ্ধার চাই। এ খাল উদ্ধার না হলে এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনে যাবো।
পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন কোম্পানি সরকারী খাল দখল করে নেওয়ার কারনে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটছে। দ্রুত দখল হওয়া খালগুলো উদ্ধার করতে হবে। এ্যাম্পায়ার স্টীল মিলের তত্ত্বাবধায়ককে কারাদন্ড দেওয়ার পরও তাদের খাল দখল থেমে নেই। তাদের খুঁটির জোর কোথায়?
এ্যাম্পায়ার স্টীল মিলের তত্ত্বাবধায়ক গোলজার হোসেন বলেন, কোম্পানিতে বালু ভরাটের সময় কিছু বালু খালে গিয়ে পড়েছে। বালু সরিয়ে খালটি পানি চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। ৩৩ ফুটের খাল ১০ ফুট কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, খাল দখলের অভিযোগের প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে পুনরায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।