মানিকগঞ্জে দালালদের চক্রে পড়ে স্বপ্ন ভাঙ্গার পথে প্রবাসী নারীর

বাবুল আহমেদ , মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: আগস্ট ৩০, ২০২১, ১১:০২ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

মানিকগঞ্জঃ জেলায় পাসপোর্ট অফিসের দালাল রাসেল দীর্ঘদিন ধরে বিদেশগামী মানুষের পাসপোর্ট করে দিতে দিতে সিনিয়র দালাল সানোয়ার হোসেনের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। সেই সুবাদে আপন বেয়াইনের পাসপোর্ট জরুরী ভিত্তিতে নবায়ন করে দেয়ার কথা বলে ১১ হাজার টাকা নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের বড় দালাল সানোয়ার হোসেনের সাথে পাসপোর্ট নবায়নের চুক্তি করেন। দালালের দালাল সানোয়ার হোসেনের খপ্পড়ে পড়ে আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পাসপোর্ট হাতে পায়নি সৌদি আরব প্রবাসী নারী লাকি আক্তার। সানোয়ার হোসেন পেশায় মানিকগঞ্জ ডিসি অফিসের নাইটগার্ডের পাশাপাশি পাসপোর্ট অফিসের একজন সক্রিয় দালাল হিসেবে পরিচিত। 

জানা গেছে,ভুক্তভোগী লাকি আক্তার মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের নুলুন্ডী এলাকার বাসিন্দা, সে দীর্ঘদিন যাবৎ স্বামীর সাথে সৌদি আরবে বসবাস করে আসছিলেন। সৌদি আরবে সন্তান সম্ভবা হলে সন্তান জন্মদানের জন্য ৬ মাসের ছুটি নিয়ে দেশে বাবা মায়ের কাছে ফিরে আসেন তিনি। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত আড়াই মাস আগে জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট নবায়ন করতে ১১ হাজার টাকায় দালাল রাসেলের সাথে চুক্তি করেন। ফইর‌্যা দালাল রাসেল একই পাসপোর্টের জন্য সিনিয়র দালাল সানোয়ার হোসেনের সাথে চুক্তি করেন। ভুক্তভোগী লাকি আক্তার পাসপোর্ট জরুরী ভিত্তিতে নবায়নের জন্য ১১ হাজার টাকা দিলেও দালালরা সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ৩৪৫০ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করেছে। এরপর আড়াই মাস যাবৎ দালালদের পেছনে পেছনে ঘুরে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী লাকি আক্তার। এখন তার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। সানোয়ার রাতে ডিসি অফিসের নাইটগার্ড হলেও দিনে দীর্ঘদিন যাবৎ পাসপোর্ট অফিসের সক্রিয় দালাল হিসেবে কাজ করে আসছে। 

ভুক্তভোগী লাকি আক্তার জানান, জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য রাসেলের কাছে ১১ হাজার টাকা দিয়েছি। রাসেল আবার ডিসি অফিসের নাইটগার্ড সানোয়ার হোসেনের সাথে চুক্তি করেছে। কিন্ত আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পাসপোর্ট হাতে পাইনি। এদিকে আমার ছুটির মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। এখন পাসপোর্ট না পেলে শিশু বাচ্চা নিয়ে আমাকে মহাবিপদে পড়তে হবে। একদিকে আমার স্বামী প্রবাসে থাকে অন্যদিকে আমার চাকরি হারাতে হবে। দালালের খপ্পড়ে পড়ে এখন আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। 

পাসপোর্ট অফিসের দালাল রাসেলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সানোয়ার ভাইকে দিয়ে আগে অনেক কাজ করিয়েছি। সেই বিশাসে এই কাজটাও তাকেই দিয়েছি। এই কাজের জন্য সানোয়ার ভাইকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি।

এদিকে দালাল সানোয়ার হোসেন দাবি করেন, আমি পাসপোর্টের কাজ করিনা। পরিচিত কেউ আসলে ফোনের মাধ্যমে পাসপোর্ট অফিসের সাথে যোগাযোগ করে পাসপোর্ট করিয়ে দেই। রাসেল কাছের ছোটভাই, সেই সুবাদে আমি টাকা ও ফাইল জমা দিয়ে দিয়েছি। লাকি আক্তার নামের কারো সাথে আমার কোন কথা হয়নি। পাসপোর্ট করে দেওয়া আমার পেশা না।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ বলেন, মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের লিমিট শেষ হওয়ায় বর্তমানে নতুন করে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রিন্ট বন্ধ রয়েছে। আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। শীঘ্রই দালালদের তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।