আদালতের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে 

কুয়াকাটা সৈকতে সরকারি জমিতে স্থাপনা নির্মাণ

রাসেল কবির মুরাদ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি  আগস্ট ৩০, ২০২১, ০৬:৪১ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

পটুয়াখালীঃ জেলার কুয়াকাটা সৈকত এলাকায় জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট এলাকায় বেরীবাঁধের বাহিরে সৈকত সংলগ্ন  সরকারী জমিতে একের পর এক নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা ও আধাপাকা স্থাপনা। ভূমি প্রশাসন নিষেধ করার পরও এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদাররা। কোন ভাবেই অবৈধ দখল কাযর্ক্রম বন্ধ করা যাচ্ছে না। আইনী জটিলতার অজুহাতে ভূমি প্রশাসন এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মান বন্ধ করতে পারছেনা বলে জানান স্থানীয় ভূমি কর্তৃপক্ষ । 

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দখল এবং নির্মাণ কাজ চালিয়ে আসছে ভূমি খেকো ওই চক্রটি। আবার কেউ কেউ এসব জমি কোটি টাকায় বিক্রি করারও অভিযোগ রয়েছে। সরকারি জমি দখল দূষণের এমন দৃশ্য দেখে হতবাক পরিবেশবিদরা। এর ফলে সরকারের গৃহীত পরিকল্পিত নগরী গড়ার প্রকল্প ভেস্তে যেতে বসেছে। এসব অবৈধ দখলদারদের বিষয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা উপজেলা ভূমি প্রশাসনকে অনুরোধ জানালেও উপজেলা ভূমি কর্তৃপক্ষ অদ্যাবদি কোন ব্যবস্থা নেয়নি। শুধুমাত্র মৌখিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে ভূমি প্রশাসনের কার্যক্রম।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা বেরীবাধেঁর বাহিরে সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এলাকায় কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ কাজ করা যাবেনা মর্মে হাই কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। উচ্চ আদালতের এমন নির্দেশনার পরও সরকারি জমি দখল এবং স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলে আসছে। গত বেশ কিছুদিন ধরে সৈকত সংলগ্ন এলাকায় সরদার মার্কেট কর্তৃপক্ষ, সানরাইজ হোটেল ও বামনা হোটেল কতৃপক্ষ পাকা ও আধা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে আসছে। এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ মৌখিকভাবে বন্ধ করলেও দখলদাররা রাতের আধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি সৈকতের বালিয়াড়িতে পাকা ভবন ও টং ঘর নির্মাণ করছে। বেরীবাধেঁর বাইরের এসব সরকারি জমি গত কয়েক বছর আগেও পতিত ছিল। ভূমি অফিসের উদাসীনতার সূযোগে এসব পতিত জমিতে ভুয়া মালিকানার দাবি নিয়ে দখলদাররা গড়ে তুলেছে আবাসিক হোটেলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

সানরাইজ হোটেল মালিক কে এম শাহজালাল বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিরোধীয় জমিতে ঘর দুয়ার নির্মাণ, সংস্কার ও ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা করতে পারবেন তিনি। সেখানে সরকার পক্ষ কোন প্রকার বাঁধা প্রদান করতে পারবেন না। আদালতের এমন রায় নিয়েও স্থানীয়দের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। অথচ সানরাইজ কর্তৃপক্ষ নতুন নতুন আধাপাকা ও টিনের ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। প্রশাসনও এসব বিষয় অবগত আছেন বলে তিনি দাবি করেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্নয়কারী লিংকন বায়েন উদ্দ্যেগ প্রকাশ করে গনমাধ্যমকে বলেন, সৈকত এলাকায় সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ পরিবেশ আইনের বিপরীত। এভাবে দখল দূষণ চলতে থাকলে সৈকত এলাকার পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। তাই এখনই দখল রোধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল সাংবাদিকদের জানান, সানরাইজ কতৃপক্ষ সেমি পাকা ঘর তুলছে শুনে তহসিলদারকে পাঠিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নতুন কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে নিষেধ করে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।