দশ বছরেও বাড়েনি মাছের চাহিদা!

ফরিদপুর মৎস্য বিভাগের দায়সারা হিসাব!

সুমন ইসলাম, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি আগস্ট ২৮, ২০২১, ০৫:২৯ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

ফরিদপুরঃ সারাদেশের মতো ফরিদপুরেও রোববার (২৯ আগস্ট) হতে শুরু হচ্ছে জাতীয় মৎস্য সেবা সপ্তাহ। এ উপলক্ষে শনিবার (২৮ আগষ্ট) দুপুরে ১৪ গণমাধ্যম কর্মী নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয় জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে।

সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সরবারহকৃত তথ্যনোটে জানানো হয়, জেলায় গত বছর মাছের উৎপাদন হয়েছে ৪৩ হাজার ৫২১ মে. টন। যা চাহিদার তুলনায় ২ হাজার ২০১ মে. টন বেশি। জনপ্রতি ৬০ গ্রাম মাছের জোগান হিসেবে ফরিদপুরে মাছের চাহিদা রয়েছে ৪১ হাজার ৩২০ মে. টন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বীজন কুমার নন্দীর সাথে বাস্তব চিত্রের রয়েছে বিরাট ফারাক। কেননা, মাছের চাহিদা নির্ণয়ে জনসংখ্যার যেই হিসাব ধরা হয়েছে সেটি আজ থেকে দশ বছর পূর্বের ২০১১ সালের আদমশুমারীর।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম এই বিষয়টি স্বীকার করে বলছেন, পরিসংখ্যান কখনোই সঠিক তথ্যকে নির্দিষ্ট করতে পারে না। তাই বাস্তব চিত্রের সাথে এর পার্থক্য রয়েছে।

মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকেরা জানান, ফরিদপুরে ব্যাপকহারে চায়না দুয়ারি ব্যবহার করে মাছের রেণু ও পোনা ধরা হচ্ছে। বাজারেও বিক্রি হচ্ছে রিঠা, বোয়াল, রুইসহ দেশীয় প্রজাতির নানান মাছ।

বিভিন্ন সময় মৎস্য বিভাগের অভিযানে যেই কারেন্ট জাল উদ্ধার হয়, সেগুলো আবার জেলেদের নিকট গোপনে বিক্রির অভিযোগও করেন একজন সাংবাদিক। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দাবি করেন যে, অভিযোগটি সঠিক নয়।

তিনি বলেন, চায়না দুয়ারী ইয়াবার মতোই ভয়ংকর হয়ে আমাদের ধ্বংস করছে। আমরা এর বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছি। তবে আমাদের জনবলের খুবই অভাব। কোন কোন উপজেলায় একজন কর্মকর্তা ছাড়া আর কোন জনবল নেই এমনও আছে।

সভায় জানানো হয়, ফরিদপুরে ১১ হাজার ৫৫৩ হেক্টর আয়তনের পাঁচটি নদীতে বছরে মাছের উৎপাদন হয় ৩ হাজার ৭৪৫ মে.টন। ২৯ জাজার ৮৩১টি পুকুর হতে ২১ হাজার ৩৫৭ মে.টন, ৭৯টি বিল হতে ১০৬২ মে.টন, পাঁচটি বাওড় থেকে ৮১৩ মে.টন, ২৯০টি প্লাবনভূমি হতে ৯ হাজার ৫৩ মে.টন ছাড়াও ৭৯টি খাল, পাঁচটি হ্যাচারি ও অন্যান্য উৎস হতে মাছের যোগান আসে।

তারা জানান, গত অর্থবছরে জেলার নয়টি উপজেলার উন্মুক্ত জলাশয়ে ৬ দশমিক ৬৩ মে.টন পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে। সাড়ে ১৫ হেক্টরে প্রদর্শনী খামার করা হয়েছে। জেলায় মৎস্য চাষি রয়েছে ২০ হাজার ৭০০ জন। এদের মধ্যে নিবন্ধিত মৎস্য চাষি ১২ হাজার ১৮০।