গাইবান্ধাঃ চাষ হচ্ছে পোকার। শুনতেই যেন কেমন লাগছে। তবে এই পোকাই হবে মুরগির খাবার। বাণিজ্যিকভাবে এমনি এক উদ্যোগই নিয়েছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গার রামধন গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আল মামুন। মূলত তিনি একজন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার।
এই ব্লাক সোলডার ফ্লাই পোকা সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এবং কৃষকের বন্ধু। ব্লাক সোলডার ফ্লাই পোকার চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করে কম খরচে মাছ এবং হাঁস-মুরগির খাদ্যের অনেকটাই জোগান দিতে পারেন। ফলে আর্থিক সাশ্রয়ের পাশাপাশি বাড়ির বর্জ্য পরিশোধন করে গুণগতমানের জৈব সারও পেতে পারে।
জানা যায়, পাখি ও মুরগীর পুষ্টিকর খাবার ‘ব্লাক সোলডার ফ্লাই পোকা। এই পোকায় রয়েছে ৪৫% প্রোটিন ও ৩৫% ফ্যাট। একটি স্ত্রী পোকা ৩৫০ থেকে ৮০০টি ডিম পাড়তে পারে। ডিম থেকে বাচ্চা (লার্ভা) জন্ম নেয়। এরপর ২১দিনে পোকা পরিপূর্ণ হলে তা পাখি ও মুরগীর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৫ দিনে একটি পোকা ডিম দেওয়ার উপযুক্ত হয় এবং ডিম দেওয়ার পরই ওই পোকা মারা যায়। পোকার খাদ্য হিসেবে উচ্ছিষ্ট ও পঁচা খাবার ব্যবহৃত হয়। চাষের জন্য প্রতি কেজি ১২ হাজার টাকা দামে এবং পাখি ও মুরগীর খাবারের জন্য ৩৫-৪০ টাকা দামে প্রতি কেজি পোকা বিক্রয় করা সম্ভব। এটি একটি লাভজনক খামার। খামারে তিন ধরণের (ভিটল, কিক্রেটস্ ও ব্ল্যাক সোল্ডার ফ্লাই) পোকা চাষ করা যায়।
এ বিষয়ে জুলফিকার আল মামুন বলেন, বাংলাদেশে ‘বায়োকনর্ভাশন ইনোভেটিভ’ সেন্টার শুরু করার লক্ষ্যে ১৫০ গ্রাম (প্রায় ১৫০টি) পোকা ২৫০ টাকায় ক্রয় করি। বর্তমানে আমার খামারে প্রায় ৩০০+৩ হাজার পোকা রয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আরো বড় খামার তৈরী করার পরিকল্পনা তার রয়েছে। তবে সরকারি ভাবে সার্বিক সহযোগীতা পেলে আরো ভালো ভাবে খামারের কাজ বড়সড় করা যাবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ফজলুল করিম বলেন, ব্লাক সোলডার ফ্লাই পোকার চাষ খুব ভালো একটা উদ্যোগ, এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি উপজেলার প্রাণীসম্পদের পক্ষ থেকে সকল ধরনের পরামর্শ দেখাশোনা সহ পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন।