গাজীপুরঃ জেলার শ্রীপুরে গলা কেটে অজ্ঞাত তরুণীকে হত্যা মামলার রহস্য দুই বছরেরও বেশী সময় পর উদঘাটন করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সুমন মিয়াকে (৩৬) গ্রেফতার করা হয়েছে। সে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের কপাটিয়াপাড়া গ্রামরে বাদশা মিয়ার ছেলে।
বৃহষ্পতিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এসপি মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, ২০১৯ সালের ২১ জুন সকালে শ্রীপুর উপজেলার পশ্চিম কপাটিয়া গামের রফিকুল ইসলামের পুকুরে অজ্ঞাতনামা তরুণীর (২০) গলাকাটা লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। নিহতের পড়নে এম্ব্রয়ডারী ও নকশী করা খয়েরী রংয়ের জামা এবং লাল রংয়ের পায়জামা ছিল। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করে।
শ্রীপুর থানা পুলিশ মামলাটি প্রায় ৩ মাসের অধিক সময় তদন্ত করে। পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ মামলার পরবর্তী তদন্তের দায়িত্ব দেয় গাজীপুরের পিবিআইকে। তদন্তকালে এ হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার (২৫ আগস্ট) সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করে পিবিআই।
আসামি সুমন মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে পেশায় অটোরিক্সা চালক। তার স্ত্রী জর্ডানে থাকে। স্ত্রী বিদেশে থাকায় সে প্রায়ই খারাপ মেয়েদের এলাকায় নিয়ে ফুর্তি করতো। ঘটনার দিন (২০১৯ সালের ২১ জুন) রাত ১টার দিকে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য এক হাজার টাকায় স্থানীয় নয়নপুর বাজার এলাকা থেকে রোজিনা নামের এক ভাসমান পতিতার সঙ্গে চুক্তি করে সুমন। সে ওই তরুণীকে কপাটিয়া পাড়ায় হৃদয়ের বাড়ীর পাশের বাঁশ বাগানের জঙ্গলে নিয়ে যায়।
সেখানে ওই তরুণীর সঙ্গে দুই দফায় শারীরিক সম্পর্ক করে সুমন। পরে রোজিনা চুক্তির টাকা চাইলে সুমন টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে ঘরে গিয়ে একটি বটি দা’ নিয়ে আসে। এরপর রোজিনাকে মাটিতে শুইয়ে নাক মুখে চাপ দিয়ে ধরে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে সুমন। পরে হৃদয়কে ফাঁসানোর জন্য রোজিনার লাশ পুকুরে ফেলে দিয়ে বাড়ি চলে যায়। পরদিন হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বটি দা’ ভেঙ্গে এক ফেরিওয়ালার কাছে বাইশ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করে দেয়। স্ত্রীর দেয়া টাকায় কেনা মোবাইল আত্মসাৎ করায় হৃদয়ের উপর ক্ষুব্ধ ছিল সুমন।
বুধবার (২৫ আগস্ট) গ্রেফতারকৃত সুমন মিয়াকে গাজীপুরের আদালতে হাজির করা হলে সে লোমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোঃ আবদুল কাদের জানিয়েছেন।