নরসিংদীঃ জেলার রায়পুরায় প্রবাসীর স্ত্রীকে টিকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ, অত:পর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। নিজ দেবর ও ননদদের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেন অগ্নিদগ্ধ প্রবাসীর স্ত্রী পারভিন বেগম (৩০)।
রোববার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে গুরুত্বর আহতবস্থায় দগ্ধ নারীকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অভিযেক্ত দেবর সহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রায়পুরা উপজেলার উত্তরবাখর নগর ইউনিয়নের লোচনপুর এলাকায় এ অগ্নিদগ্ধের ঘটনা ঘটে।
অগ্নিদগ্ধ পারভিন বেগম জানায়, রায়পুরার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের সোবানপুর গ্রামের দানা মিয়ার মেয়ে পারভিন বেগমের সাথে মরজাল এলাকার প্রবাসী জাকির হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ১০ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। পারভিন বেগমের স্বামী প্রবাসের থাকার কারণে প্রায় সময়ই শ্বশুর বাড়ীর লোকজন পারভিন বেগম ও তার সন্তানের ওপর কারণে-অকারণে নির্যাতন করতো।
বছরখানেক পূর্বে পারভিন বেগমের দেবর আলী হোসেন পারভিনের সন্তানের পায়ে দাদিয়ে কোপ দেয়। নাতনীর পায়ে কোপ দেওয়ার ঘটনায় পারভিনের বাবা দানা মিয়া থানায় একটি মামলাও দায়ের করেছিল। এর পর থেকে শ্বশুরবাড়ীর লোকজন মামলা তুলে নিতে পারভিনের উপর চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। এতে রাজি না হওয়ায় নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে সে স্বামীর বাড়ী ছেড়ে বাবার বাড়ী সোবানপুরে গিয়ে উঠতে বাধ্য হয়। এরই মধ্যে শনিবার টিকা দেওয়ার নাম করে দগ্ধ পারভিনকে বাবার বাড়ী থেকে মরজাল শ্বশুর বাড়ীতে ডেকে নিয়ে আসে।
বিকালে দেবর আলী হোসেন, ননদের ছেলে শাহরিয়ার, ননদ তাসলিমা বেগম ও জ্যা রহিমা বেগমের সাথে শ্বশুর বাড়ী থেকে সিএনজি যোগে টিকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। সিনজিতে উঠে কিছুক্ষন পর তার চোখমুখ বেধে ফেলে। রাতে তার দেবর কোন নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে সিএনজি থেকে নামিয়ে তাকে ধর্ষণ করে বলে জানায় পারভিন বেগম। পরে আবার সিএনজিতে উঠিয়ে এদিক সেদিক ঘুরতে থাকে। পরে রায়পুরা-বারৈচা সড়কের পাশে লোচনপুর এলাকার একটি বাঁশঝাড়ের পাশে নিয়ে যায়।
সেখানে এক পর্যায়ে তার দেবর তরল জাতীয় কিছু শরিরে ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। অবস্থার অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাত ৩ টার দিকে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এদিকে ঘটনায় অভিযুক্ত দেবর আলী হোসেন ও ননদের ছেলে শাহরিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গৃহবধুর গায়ে আগুন দেয়ার সত্যতা স্বীকার করে রায়পুরা থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, দেবর সহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। একই সাথে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে।