বরগুনাঃ উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলায় ফার্মেসিগুলোতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সংকটে চরম ভোগান্তিতে পরেছে ক্রেতারা। বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরেও ক্রেতারা এ জাতীয় ট্যাবলেট কিনতে পারছে না। তবে জ্বর-সর্দি-কাশির সাধারণ এ ওষুধ না থাকার কারণ হিসেবে দোকানিরা বলছেন সরবরাহ নেই।
ক্রেতাদের অভিযোগ পৌর শহরসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে বাজারগুলোর কোথাও ফার্মেসিতে এই জাতীয় ওষুধগুলো পাওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েক সপ্তাহে এ জনপদে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় হাসপাতালে বেড়েই চলেছে রোগীর চাপ, সেই সাথে বাড়ছে প্রয়োজনীয় ওষুধের চাহিদা। তাই করোনা রোগীর পাশাপাশি সাধারণ রোগীদের বর্ধিত চাহিদার কারণে প্যারাসিটামল জাতীয় কয়েকটি ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে উপজেলার ফার্মেসিগুলোতে এমনই চিত্র সরেজমিনে ঘুরে দেখা মেলে।
জ্বরের আক্রান্ত ৯ বছরের শিশুর জন্য ওষুধ নিতে এসেছিলাম উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো: ছগির আলম। শনিবার সকালে জ্বরের ঔষধ এইচ প্লাস ক্রয়ের জন্য এক ফার্মেসী থেকে অন্য ফার্মেসি ঘুরছিলেন। বেশ কয়েকটি ফার্মেসি ঘুরে জ্বরের জন্য এইচ প্লাস খুঁজে পাননি এমনই অভিযোগ তার। তিনি জানান, পৌর শহরের ফার্মেসি পট্টিতে চাহিদা পত্র নিয়ে দোকানে দোকানে পর্যাপ্ত ওষুধ মেলাতে পারেনি। একই অবস্থা আরও একাধিক ক্রেতার। এমনই কয়েকজন ক্রেতা জানান, কয়েকদিন ধরে তাদের পরিবারগুলোর সদস্যদের মাঝে দেখা দিয়েছে জ্বরের প্রকোপ। সেই সঙ্গে সর্দি, শরীর ব্যথা। হন্য হয়ে বাজার ঘুরেও কোনও দোকানে নাপা কিংবা নাপা এক্সট্রেন্ড পাওয়া যায়নি।
ঔষধ ক্রিয়কারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, কোম্পানি থেকে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আর এইচএক্সআর জাতীয় ট্যাবলেটও খুব সীমিত পরিমাণে সরবরাহ করছে। এ কারণেই সর্বত্র এই ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে।
পৗর শহরের প্রানকেন্দ্রের তাজ ফার্মা এন্ড সার্জিক্যাল ফার্মেসির মালিক মো: হুমায়ূন কবির বলেন, ‘জ্বরের ওষুধ এইস, এইস প্লাস, এইচ এক্স আর ট্যাবলেট, ফাস্ট, ফাস্ট এক্স আর ওষুধেরও সঙ্কট বিদ্যমান রয়েছে। কোম্পানি যে পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করে তা চাহিদার তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। প্রায় এক মাস ধরে এই সংকট চলছে।
মেসার্স সিকদার মডেল ড্রাগ হাউজের প্রোপাইটার মো: কামাল হোসেন পল্টু জানান, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের জন্য ক্রেতাদের আহাজারি চলছে। তার পরেও দিতে পারছিনা। প্রতিদিনই কোম্পানি গুলোতে ওষুধের জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তবে সরবরাহ না থাকায় আমাদেরও কিছু করার থাকছে না।
তবে কেউ কেউ বলেন, হঠাৎ করে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে জ্বরের ওষুধের চাহিদা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। আপাতত নাপা ও এইস গ্রুপের অন্য ওষুধ দিয়ে ক্রেতাদের বিদায় করা হচ্ছে। আরও বেশী সময় নাপা ও এইস ট্যাবলেট ও সিরাপের সরবরাহ না থাকলে আরও চরম সংকটের মধ্যে পরতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তেন মং জানান, শুনছি বাজারের ফার্মেসিতে বেক্সিমকো কোম্পানির নাপা জাতীয় ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, বাজারে ওষুধ সরবরাহ না থাকলে ভিন্ন কথা তবে বিনা অজুহাতে ফার্মেসিগুলোতে কোন ধরনের ওষুধের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার সূয়োগ নেই। খুব দ্রুতই বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। তার পরেও কেউ যদি এরকম করে থাকে সুনির্দিষ্ট প্রমান সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।