যশোরঃ বিভিন্ন সময় ভালো কাজের আশায় দালালের মাধ্যমে ভারতে গিয়ে আটক হওয়ার ৫ বছর পর ১০ বাংলাদেশি নারী-পুরুষকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারত সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই ) সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে সাত জন পুরুষ ও তিন জন নারীকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
ফেরত আসার হলো, বাগেরহাট জেলার শামছুল হক এর ছেলে রাসেল ফকির (৩০) ও তার স্ত্রী আয়শা আক্তার (২৪), একই জেলার মোড়লগঞ্জ জেলার নয়ন হালদার (২৪) সাজু চন্দ্র (৩০) খোকন আলী (২৭)ও রাছেল হোসেন (২৯), নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পেড়োলি গ্রামের রব্বান শেখ এর মেয়ে রোকসানা খাতুন (১৮), যশোর জেলার পুলেরহাট গ্রামের সুলতান শিকদার এর কন্যা মাহমুদা আক্তার (২৩), খুলনা জেলার খোকন আলীর ছেলে সাগর হোসেন (৩৪) ও হবিগঞ্জ জেলার ছাত্তার মিয়ার ছেলে গোলাপ মিয়া (৩৫)। এদেরকে অভিভাবকদের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য গ্রহণ করেছে রাইটস যশোর ও জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার নামে দুটি এনজিও সংস্থা।
ফেরত আসা রোকসানা খাতুন বলেন, সে ২০১৬ সালে দালালদের খপ্পরে পড়ে ভারতে পাচার হয়। এরপর সেখানে বাসা বাড়ির কাজের সময় পুলিশের কাছে গত ২০১৮ সালে আটক হয়ে জেলে যায়।
যশোর এর মাহমুদা খাতুন বলেন, ২০১৭ সালে সে পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে যায়। সেখানে তার পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলে। তারপর তাকে পাসপোর্ট না থাকায় পুলিশ আটক করে জেল খানায় পাঠায়।
খুলনার সাগর হোসেন বলেন, আমরা সেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ করার সময় পুলিশ আমাদের আটক করে। এরপর প্রায় তিন বছর জেল খেটে আজ দেশে ফিরি।
যশোর রাইটস এর তথ্য অনুসন্ধান কর্মকর্তা তৌফিকুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন সময় দালালের খপ্পরে পড়ে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে ব্যাঙ্গালুর যান। পরে সেখানকার পুলিশ তাদের আটক করে আদালতে পাঠালে আদালত তাদের ৩ থেকে ৫ বছরের সাজা দেন। পরবর্তীতে একটি এনজিও সংস্থা তাদের ছাড়িয়ে নিজেদের শেল্টার হোমে রাখে। এরপর দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে আজ বৃহস্পতিবার ভারত সরকারের দেয়া বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে দেশে ফেরত আসে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, সাত পুরুষ ও তিন মহিলাকে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদেরকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখান থেকে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার ও রাইটস যশোর নামে দুটি এনজিও সংস্থা তাদের গ্রহণ করবে। যেহেতু তারা ভারত ফেরত সেহেতু তাদের ১৪ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তারপর তাদের পরিবারে কাছে হস্তান্তর করবে বলে জানান তিনি।