গাইবান্ধাঃ জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বামনডাঙ্গা আঞ্চলিক ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল এখন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক।
অনুপ্রবেশকারী এ নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটিসহ জেলা, উপজেলা কমিটির নিকট অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ করেছেন উপজেলা আ’লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান। এঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০১ সালে উপজেলার বামনডাঙ্গা আঞ্চলিক শাখার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন। পরে ২০০৩ সালে উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী তথা ছাত্রদলের নেতা আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল ২০১০ সালে উপজেলার আজেপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করেন।
এঘটনায় তার বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় জিআর ২৭৫/২০১০ নং মামলা দায়ের করেন মাদ্রাসার সুপার আব্দুস সাত্তার। পরবর্তীতে সেই মামলা থেকে নিজেকে বাঁচাতে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা বনে যান। পরে সুযোগ বুঝে সত্য গোপন করে তিনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপজেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক পদটি বাগিয়ে নেন। এ নিয়ে উপজেলায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।
এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য গোপন করায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে কেন অব্যাহতি দেওয়া হবেনা তা জানতে চেয়ে জেলা কমিটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেলকে। তিনি ইতোমধ্যেই নোটিশের লিখিত জবাব দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা আ’লীগের যুগ্ন আহবায়ক রেজাউল আলম রেজা জানান, আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল অনেক দিন থেকেই আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তবে সে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেছে কিনা তা জানা নেই।
এবিষয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সংগঠক আরিফুল ইসলাম রাসেল বলেন, 'আমি ১৯৯৬ সাল থেকে ছাত্রলীগের দায়িত্বে ছিলাম। কখনো আব্দুল্লাাহ আল মেহেদী রাসেলকে ছাত্রলীগ করতে দেখিনি। বরং সে ও তার ভাইয়েরাসহ ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতা সাইফুলকে ছাত্রলীগ করার কারণে মারপিট করেছে। তখন সে ছাত্রদলের সক্রিয় নেতা ছিল। পরে সে কিভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপজেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক হলো তা জানিনা। তিনি আরও বলেন রাসেলের মতো হাইব্রিড নেতাদের কারণে আজ আওয়ামী লীগের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এদেরকে অতি শীঘ্রই দল থেকে বের করে দেয়া দরকার। আশা রাখি স্বেচ্ছাসেবক লীগ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এবিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপজেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক।
আমাকে এই মিথ্যা অভিযোগের কারণে নোটিশ দেয়া হয়েছিল আমি তথ্য প্রমাণসহ জবাব দাখিল করেছি। আমি ছাত্রলীগের সক্রিয় একজন কর্মী ছিলাম। কখনো ছাত্রদল করিনি। গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ রঞ্জু বলেন, তথ্য গোপন করায় তাকে দল থেকে কেন অব্যাহতি দেওয়া হবেনা তা জানতে চেয়ে জেলা কমিটি থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। সে ইতোমধ্যেই নোটিশের জবাব দিয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।