উত্তরাঞ্চলে কোভিড টিকা কেন্দ্র থেকে করোনা ছড়ার আশংকা

জিকরুল হক, উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি জুলাই ২৭, ২০২১, ০১:০৯ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

রংপুরঃ উত্তরাঞ্চলে কোভিড টিকা কেন্দ্রগুলোতে সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। কেন্দ্রে আগত টিকা গ্রহণকারীদের অধিকাংশের মুখে নাই মাস্ক। ফলে টিকা কেন্দ্র থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন সমাজের বিশিষ্টজনরা। এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষ শুধু করোনায় আক্রান্ত হবে না, আক্রান্ত হবে টিকা প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীরাও। রংপুর বিভাগের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে উত্তরাঞ্চলে কোভিড টিকা কেন্দ্র রয়েছে ৫৯টি। এসব টিকা কেন্দ্রে প্রতিদিন ১৮ হাজার ৫০০ নারী পুরুষ টিকা গ্রহণ করছে।

মঙ্গলবার পর্যন্ত ২ লাখ ১৪ হাজার ৭৫৯ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। এবারে সিনোফার্মা ও মর্ডানা কোম্পানির দেয়া হচ্ছে টিকা। তবে মফস্বল এলাকায় সিনোফার্মার টিকা প্রদানের হার সবচেয়ে বেশি। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার বৃদ্ধি পাওয়ায় টিকা নেয়ার হার পূর্বের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়াও বয়সের শিথিলতার কারণেও টিকা গ্রহণকারির সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব ও মুখে মাস্ক পরিধানের সংখ্যা দিনদিন কমে আসছে। গ্রামের হাট-বাজারগুলোর অবস্থাও তথৈবচ। এদিকে টিকা কেন্দ্রগুলো নিয়মিত মনিটরিং করার দায়িত্বে আছে সিভিল সার্জনের নের্তৃত্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তবে অধিকাংশ টিকা কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে মনিটরিংয়ের কোন চিত্র চোখে পড়েনি।

টিকা নিতে আসা মানুষগুলো কোনপ্রকার সামাজিক দূরত্ব না মেনে কেন্দ্রের সামনে ভীড় জমাচ্ছে। কেন্দ্রে আসা মানুষদের সামাজিক দূরত্ব মেনে ও মুখে মাস্ক পড়ে টিকা নিতে হবে এমন কোন নির্দেশনা সম্বলিত ব্যানার কিংবা বিলবোর্ড কেন্দ্রগুলোতে চোখে পড়েনি। এমনকি টিকা কেন্দ্রে আসা মানুষদের সামাজিক দূরত্ব মেনে লাইনে দাড়িয়ে টিকা নিতে হবে এমন নির্দেশনাও কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে না। এমন হ,য,ব,র,ল অবস্থায় টিকা কেন্দ্র থেকে করোনা ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা প্রকাশ করছেন অভিজ্ঞজনরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে টিকা নেয়ার হার বাড়লেও আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিল প্রতিদিন লম্বা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান মতে উত্তরাঞ্চলে গড়ে করোনা আক্রান্তের হার শতকরা ৫০ভাগ। ইদানিংকালে শহরের চেয়ে গ্রামীণ জনপদে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে সমাজ সচেতন মানুষরা সবচেয়ে বেশি আতংকে দিন পাড় করছে।

গ্রামের হাটবাজার ও মোড়ের খাবারের দোকানগুলোতে সকাল বিকাল দেখা যাচ্ছে উপচে পড়া ভীড়। এসব স্থানে আগত মানুষরা কোনোভাবেই সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পড়তে আগ্রহী নেই। তাদের সাফ কথা, সবকিছুর মালিক ওপরওয়ালা, তিনি চাইলে রাখবেন, না চাইলে দুনিয়া থেকে তার বান্দাকে তার স্থানে তুলে নিয়ে যাবেন। টিকা কেন্দ্রগুলোতে সামাজিক দূরত্ব মোটেই মানা হচ্ছে না, এমন বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রংপুর বিভাগের পরিচালক ডা. মোতাহারুল ইসলামের সঙ্গে।

তিনি জানান, সারাদেশের কোন কেন্দ্রেই সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। এর জন্য মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বাড়ছে। এক্ষেত্রে মানুষ নিজেই সচেতন না হলে সরকারের কিছুই করার নেই। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। যাতে সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পড়ে মানুষ কেন্দ্রে টিকা নিতে আসে।