বগুড়াঃ জেলায় পুলিশ সুপারের নামে ২৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবির) দুই কর্মকর্তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। কর্মকর্তা দু'জন হলেন ডিবি পুলিশের সাইবার ইউনিটের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর এমরান মাহমুদ তুহিন ও এসআই শওকত আলম। তাদেরকে রবিবার (২৫জুলাই) বগুড়া থেকে ছাড়পত্র দিয়ে রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআর এফ) এ বদলি করা হয়েছে। এছাড়া এসআই শওকতকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ১৪ জুলাই পুলিশ সুপার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন। কমিটির বাকি সদস্যরা ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ ও কোট ইন্সপেক্টর। ওই কমিটি ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন জেলার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা।
জানা যায়, এ বছরের ২৭ মে পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের মাস্টার বিড়ি ফ্যাক্টরিতে যান। সেখানে বিপুল পরিমাণ জাল ব্যান্ডরোল মজুদ আছে বলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক হেলালকে ডেকে আনেন তারা। তবে হেলাল সেগুলো বৈধ দাবি করেন৷
কিন্তু ডিবি পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা ব্যান্ডরোলসহ হেলালকে আটক করতে চান। একপর্যায়ে এসআই শওকত হেলালকে জানান এসপি স্যারের তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান হয়েছে। স্যারকে ২কোটি টাকা না দিলে মামলা দেওয়া হবে। পরে হেলাল ২৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়। যার ৯ লাখ টাকা ওই দিন রাতে ওই দুই কর্মকর্তাকে হেলাল দিয়ে দেন। বাকি ১৬ লাখ টাকা এক সপ্তাহ পর দেওয়ার কথা থাকলেও ফ্যাক্টরির মালিক নানারকম তালবাহানা শুরু করেন।
এদিকে সম্প্রতি পুলিশ সুপারের বদলির আদেশ হলে ইন্সপেক্টর তুহিন ও এসআই শওকত হেলালের ওপর চাপ দিতে থাকেন। একপর্যায়ে হেলাল তার এক পরিচিত জনের মাধ্যমে ১৩ জুলাই বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানান। পুলিশ সুপার বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক হেলালকে ডেকে আনেন। বিস্তারিত সব জেনে হেলালের থেকে একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন। অভিযোগের পর ১৪ জুলাই সন্ধ্যায় হেলালকে ৯ লাখ টাকা ফেরত দেন ইন্সপেক্টর তুহিন ও এসআই শওকত।
বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ জানান, আমরা তদন্তে দুই কর্মকর্তার উপর আসা অভিযোগ এর সত্যতা পেয়েছি। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।