সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকার পথে ভারত থেকে আসা অক্সিজেন

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি জুলাই ২৫, ২০২১, ০৬:০৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
সিরাজগঞ্জঃ ভারত থেকে আসা ২০০টন তরল অক্সিজেন সিরাজগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছানোর পর থেকেই চলছে খালাস কার্যক্রম। এর মধ্যে ১টি ট্যাংকলরি ২০টন তরল অক্সিজেন নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। আরেকটি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
 
রবিবার (২৫ জুলাই) বিকাল পৌনে ৪টার সময় সিরাজগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্যাংকলরিটি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বাকি ট্যাংকলরিগুলো পর্যায়ক্রমে লোড নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন লিন্দে'র আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও প্রশাসন বিভাগের ব্যাবস্থাপক সুফিয়া আক্তার ওহাব। 
 
এর আগে ভারতের ঝাড়খন্ড প্রদেশের জামশেদপুর টাটানগর থেকে গতকাল (শনিবার) সকাল ১০টায় দশটি কন্টেইনারে তরল অক্সিজেন নিয়ে ছেড়ে আসা ইন্দো-বাংলা ট্রেনটি সকাল পৌনে ১১টার দিকে দশটি কন্টেইনারে তরল অক্সিজেন নিয়ে বঙ্গবন্ধ সেতু পশ্চিম ষ্টেশনে প্রবেশ করে।
 
এসময় সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ, সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ রাম পদ রায়, লিন্দে'র আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও প্রশাসন বিভাগের ব্যাবস্থাপক সুফিয়া আক্তার ওহাব, গ্যাস বিভাগের বিক্রয় ও বিপনন শাখার মহা ব্যবস্থাপক নুরুর রহমান, বঙ্গবন্ধু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন, স্টেশন মাষ্টার মো. ইসমাইল হোসেনসহ সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন, রেলওয়ে ও রেলওয়ে পুলিশ, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ ছাড়াও অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। 
 
লিন্দে বাংলাদেশ এর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও প্রশাসন বিভাগের ব্যাবস্থাপক সুফিয়া আক্তার ওহাব বলেন, ভালভাবে আমরা ২০০টন অক্সিজেন নিয়ে এসে এই অবধি পৌঁছেছি। আমরা এতো অল্প সময়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন সহ সবার এতো আন্তরিক সহযোগিতা পাবো সেটা ভাবাই যায়না। তাছাড়াও লিন্দে চেষ্টা করছে করোনাকালীন এই সময়ে অক্সিজেনের যে চাহিদা বেড়েছে তা যতটুকু সম্ভব যোগান দিতে। 
 
লিন্দের গ্যাস বিভাগের বিক্রয় ও বিপনন শাখার মহা ব্যাবস্থাপক নুরুর রহমান জানান, যেহেতু প্রতিটি ট্যাংকলরিতে ২০টন করে মোট ১০টাতে ২০০টন তরল অক্সিজেন লোড হয়ে ঢাকা যাবে সেক্ষেত্রে অক্সিজেনবাহী প্রতিটি ট্যাংকলরি লোড হতে সময় লাগবে ২ঘন্টার মতো লাগার কথা থাকলেও চাপ কম থাকায় প্রায় ৪ঘন্টার মতো সময় লাগছে। যেহেতু ২টার বেশি একসঙ্গে লোড করা যাচ্ছেনা সেক্ষেত্রে সম্পুর্ন অক্সিজেন আনলোড করতে পর্যায়ক্রমে ৫বারে অন্তত ২০ঘন্টা সময় প্রয়োজন হবে। 
 
লিন্দের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিভাগের কান্ট্রি ব্যাবস্থাপক রাজিব দেবনাথ বলেন, স্টেশনের সামনের দিকে জায়গা কম থাকায় আমরা এক সঙ্গে দুইটার বেশি ট্যাংক লরিতে লোড করতে পারছিনা তাই ১০টি ট্যাংক লরিতে লোড করতে অনেক সময় লাগবে। যদি অক্সিজেন বাহী ট্রেনের বাল্ব বক্স (অক্সিজেন আনলোড মেশিন) টা স্টেশনের সামনে না হয়ে উল্টো দিকে থাকতো তাহলে একসঙ্গে সবগুলোই লোড করা সম্ভব হতো। 
 
সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ রাম পদ রায় বলেন, এটা আমাদের করোনাকালীন চিকিৎসা সেবায় অক্সিজেনের যে সংকট তা অনেকাংশেই লাঘব করবে। এইবার আসা শুরু হলো এখন পর্যায়ক্রমে এই অক্সিজেন কিন্তু ভারত থেকে দেশে আসতেই থাকবে। এছাড়াও এখান থেকে ঢাকায় নেয়ার পরে সারাদেশের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিভাগ বন্টন করবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। 
 
এসময় জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ বলেন, করোনার এই ক্রান্তিলগ্নে ২০০টন অক্সিজেন দেশে আসা টা আমাদের অনেক বড় অর্জন। যেহেতু এবারই ট্রেনযোগে ও সিরাজগঞ্জে প্রথম ভারত থেকে আসা অক্সিজেন খালাস হলো তাই এখান থেকে আবার লোড ট্যাংকারে করে ঢাকাতে যাবে। পরবর্তীতে আমরা উর্ধতন কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দেখবো এটা সরাসরি ঢাকায় নেয়া যায় কিনা। তাহলে আরও সময় বাচবে।