গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবীতে আবারও সড়ক অবরোধ

মোক্তার হোসেন, গাজীপুর প্রতিনিধি:  জুলাই ১৭, ২০২১, ০৯:৩৬ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

গাজীপুরঃ গাজীপুর-ঢাকা সড়ক আবারও অবরোধ করেছেন শ্রমিকেরা। বকেয়া বেতনের দাবীতে শনিবার সকাল ১০টা থেকে ওই সড়কের লক্ষীপুরা এলাকায় স্টাইল ক্রাফ্ট লিমিটেডের শ্রমিক-কর্মচারীরা অবরোধ তৈরী করেন। এর আগেও বেশ কয়েকদিন তারা একই স্থানে একই দাবীতে অবরোধ করেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ৮ টার দিকে বিক্ষোভকারীরা কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করে। পরে কারখানার কোনো কর্র্তপক্ষ না আসায় তারা সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর-ঢাকা সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে। এসময় তারা বেতন ভাতার দাবীতে নানারকম শ্লোগান দেয়। কারখানার শ্রমিক সুইং শাখার শ্রমিক চামেলী, খোদেজা বেগম বলেন, চলতি মাসের ১৭ দিন হয়ে গেলেও তারা বেতন পাচ্ছেন না। ঈদ বোনাসও পাননি। ঘরভাড়া দিতে না পেরে বাড়ির মালিকের নানা ধরনের কথা শুনতে হচ্ছে। বেতন-বোনাস না পেলে ঈদে বাড়ি যাবেন কীভাবে, সে চিন্তায় রয়েছেন।

বিক্ষোভকারীরা জানায়, স্টাইল ক্র্যাফ্ট পোশাক কারখানায় প্রায় সাড়ে ৭শ’ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক রয়েছে। কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা চলতি বছরের মার্চ, মে, জুন এবং ২০২০ সালের মার্চ ও আগস্ট মাসের শতকরা ৫০ ভাগ, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর, অক্টোবর মাসের ৩৫ ভাগ, নভেম্বর মাসের ১৫ ভাগ বেতন পাওনা রয়েছে। এ ছাড়াও কারখানার কর্মচারীরা ইনক্রিমেন্টসহ তাদের চার বছরের বাৎসরিক ছুটি ও ২ বছরের ঈদ বোনাসের টাকা পাওনা রয়েছে। তারা বেশ কিছুদিন ধরে এসব পাওনাদি পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়ে আসছিল। কারখানা কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাওনাদি পরিশোধের একাধিকবার তারিখ ঘোষণা করলেও পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাওনা গত মার্চ মাসের বকেয়া বেতন ৭ জুলাই এবং মে ও জুন মাসের বকেয়া বেতন ১৫ জুলাই ও ঈদবোনাস ১৮ জুলাই পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে তারিখ ধার্য্য করে ঘোষণা দেয়। কিন্তু মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৭ জুলাই কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ না করে তিন মাসের বকেয়া পাওনা একত্রে ১৫ জুলাই পরিশোধের ঘোষণা দেয়। এরপর থেকে তারা ছুটির দিন ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ কররেছন। গত ঈদুল ফিতরের সময়ও আন্দোলন করে তাদের বেতন বোনাস নিতে হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন শিল্প পুলিশের পরিদর্শক সমীর চন্দ্র সূত্রধর বলেন, প্রতি মাসেই শ্রমিকেরা আন্দোলন করলে তাঁদের বেতন পরিশোধ করা হয়। এটি এখন এ কারখানার নিয়মে পরিণত হয়েছে।

কারখানার ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিক জানান, শ্রমিকদের রোজার ঈদের আগে এপ্রিল মাসের ১৯ দিনের বেতন এবং ঈদ বোনাস দেয়া হয়েছে। এখন শুধু এপ্রিলের ১১দিন এবং মে-জুন মাসের বেতন তারা পাবে। গত ১০ জুলাই শনিবার শ্রমিকদের নিয়ে কারখানার এমডি ভার্চুয়ালি মিটিং করেছেন। মিটিংয়ে করোনাকালীন বন্ধের প্রথম ৪৫দিনের ৫০ শতাংশ এবং পরের দিনগুলোর ২৫ শতাংশ বেতন দেয়ার কথা জানানো হয়। কিন্তু শ্রমিকরা সিদ্ধান্তটি না মেনে বিক্ষোভ করছে।