ব্যস্ত সময় পার করছেন রায়গঞ্জের কামার শিল্পীরা

আশরাফ আলী, রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জুলাই ১৭, ২০২১, ০৪:০৫ পিএম
ছবি : আগামী নিউজ

সিরাজগঞ্জঃ জেলার রায়গঞ্জে কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। আফর টেনে আগুনে বাতাস দিয়ে লোহা গলিয়ে নিপুন হাতে শৈল্পিক সৃষ্টির কারিগর কামার তৈরি করছেন হরেক রকম গৃহস্থালির নিত্য প্রয়োজনীয় দেশীয় অস্ত্র।

কিন্তু দিন দিন হাড়িয়ে যাচ্ছে কামার শিল্প। অনেক কামার পরিবার হুমকীর মুখে, তারপরেও জীবন ও জীবিকার তাগিতে উপজেলার অনেক জায়গায় কামার পরিবার এখনও তাদের বাব-দাদার পেশা ধরে রেখেছেন। গৃহস্থালীর নিত্য প্রয়োজনীয় দা, ছুরি, বটি, খোন্তা, সাবল, কাঁচি তৈরি করে এক সময় তারা ভালই ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এ পেশায় আয় দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। আবার অনেক পূর্ব পুষের পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় ঝুকে পড়েছেন। ক্ষুদ্র এ শিল্পের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত লোহা ও কয়লার দাম অসাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে তাদের তৈরি জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা এই শিল্প থেকে মুখ ফিয়ে নিচ্ছেন। আবার অনেকের পেশা বদলের ইচ্ছা থাকলেও বাড়তি পুঁজি বিনিয়োগ করার সামর্থ না থাকায় তারা এ পেশা আকড়ে ধরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

গতকাল শনিবার সরজমিনে গিয়ে জানাগেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় শতাধিক কামার পরিবারের অধিক অংশ পরিবারই তেমন ভাল নেই।

কথা হয় উপজেলা ধামাইনগর ইউনিয়নের গনেশ কর্মকারের সাথে, তিনি জানান এখন লোহার দাম বেশি এবং লোহার জিনিস পত্র তৈরি করে বিক্রি করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অন্যের কাজের মুজুরী থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে খেয়ে পড়ে এক মেয়ে বিয়ে দিয়েছি ও এক সন্তানকে বড় করছি।

একই পেশার প্রানেশ কর্মকার বলেন, পাথর কয়লা দাম বেশি ও কাঠ কয়লা না পাওয়ার কারনে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আমরা জিনিসপত্র তৈরি করতে পারছি না। শুধু কোরবানী ঈদের সামনে ও কৃষকের ফসল কাটার আগে একটু কাজ ভাল হয়, বাকী সময় তেমন হয় না। তিনি আরও জানান বসবাসের ভিটা-মাটি ছাড়া তাদের আর কোন জমি-জমা নেই। কৃষি বান্ধব এ শিল্পে প্রয়োজনীয় পুঁজি না থাকা ও উপকরন সমূহ সঠিক ভাবে না পাওয়ায় তাদের এই দুর্বস্থার মূল কারণ হিসাবে দেখছেন স্থানীয় অভিজ্ঞ মহল।