কোরবানির পশু বিক্রি: যশোরে অনলাইনে সাড়া নেই, হাটে ক্রেতাদের ভিড়

বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি জুলাই ১৬, ২০২১, ০৯:২৮ পিএম
ছবিঃ সংগ্রহিত

যশোরঃ করোনার কারণে যশোরে অনলাইনে কোরবানির  পশু বিক্রি শুরু হয়েছিল ১২ জুলাই। যশোর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এটি করা হয়েছিল। কিন্তু ১৫ জুলাই থেকে দেশ স্বাভাবিক অবস্থায় গেলে আর অনলাইন হাটের দিকে আগ্রহ কম ক্রেতাদের। তারা স্ব-শরীওে পশুহাটে ভিড় করছেন। তবে বেশি সচেতন কিছু মানুষ অনলাইন থেকে পশু কিনছেন।

শহরের বেজপাড়ার বাসিন্দা দিলু হাসান জানান, আমি গত দুই দিনে দুটি হাটে গিয়েছি গরু দেখতে। সরাসরি হাটে না আসলে পশু বোঝা যায়না। দেখেমুনে না কিনলে ঠকতে হয়। অনলাইনে এসব করা যায়না। বকচর এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন জানান, কোরবানীর পশু ক্রয় করতে হলে হাটে যেতে হবে। না হলে অনলাইনে এক রকম দাম লেখা হচ্ছে, ফোন করলে বেশি দাম বলছে।

জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী মানুষের সামাজিক ও স্বাভাবিক জীবনে বিশাল প্রভাব ফেলেছে। একটি বৈরী পরিস্থিতিতে ইদ-উল-আযহা সমাগত। পশুর হাটে উচ্চমাত্রার সংক্রমণ ঝুঁকি থাকায় বিকল্প হিসেবে অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে। আশা করব সবাই অনলাইনে পশু ক্রয় করবেন।

যশোর হাট ডট কম ওয়েব সাইটে পশুর বিজ্ঞাপন দিতে ওয়েবসাইটিতে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। সাইটটি ভিজিট করার সময় লগইন/ রেজিস্টার লেখার উপর ক্লিক করে তারপর নিজের অপশনে যেতে হবে। সেটি থেকে বিক্রেতারা অপশন বাছাই করলে নাম, ইমেইল এড্রেস ও ফোন নম্বর দিয়ে খুব সহজেই একাউন্ট তৈরি করা যাবে। একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে ভেন্ডর ড্যাশবোর্ড হতে পশুর বিজ্ঞাপন আপলোড এবং প্রচার করতে পারবেন। পশুর বিজ্ঞাপন তৈরির সময় পশুর ছবি, সুন্দর একটি টাইটেল, পশুর বয়স, ওজন, রং, দাম, বিক্রেতা ও খামারীর নাম, উপজেলা-ইউনিয়ন-গ্রামের নাম উল্লেখপূর্বক ঠিকানা, মোবাইল নং ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে। ক্রেতাগণও ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে পশু পছন্দ করতে পারবেন। প্রত্যেক পশুর মালিকের নাম মোবাইল নম্বরে তারা যোগাযোগ করে দরদাম ঠিক করতে পারবেন। খামারীদের সাথে যোগাযোগ করে পছন্দের লোকেশন হতে পশু সংগ্রহ করতে পারবেন। ক্রেতাদের সুবিধায় ইউনিয়ন ভিত্তিক তথ্য আপলোড করা হয়েছে। এতে ক্রেতারা চাইলে ইউনিয়ন ভিত্তিক খামারীদের নিকট হতে পশু ক্রয় করতে পারবেন।একইভাবে ফেসবুক পেইজেও বিজ্ঞাপনসমূহ প্রকাশ করা হচ্ছে। সেখান থেকেও বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করে পশু ক্রয় করা যাবে। যশোর জেলা প্রাণী ও পশুসম্পদ কর্মকর্তা বকতিয়ার হোসাইন জানান, জেলার প্রায় ১২ হাজার খামারি ৯০ হাজারেরও বেশি পশুকে কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করেছেন। ইদের সময় পশুহাটগুলোতে ভিড়, দালালদের দৌরাত্ম্য, নিরাপত্তাহীনতা এবং কোভিড সংক্রান্ত স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতা জয় করতে এ অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী। কিন্তু আমরা হাটগুলোতে গিয়ে দেখতে পাচ্ছি মানুষের প্রচন্ড ভিড়। তারা স্বশরীরে হাটে গিয়ে পশু ক্রয় করছেন। যশোরের রুপদিয়া পশু হাটের গরু বিক্রেতা আবুল হোসেন জানান, আমি এবার কোরবানির জন্য ৪টি গরু প্রস্তুত করেছিলাম। করোনায় আমাদের সেই প্রস্তুতি নষ্ট হবার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু সরকার হাট বসতে দেয়ায় গরুর ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। আমার গরুর দাম এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে রয়েছে।