মানিকগঞ্জের শিবালয়ে ঈদকে সামনে রেখে আসছে হাজার হাজার গরু

নিরঞ্জন সুত্রধর, শিবালয়(মানিকগঞ্জ)প্রতিনিধি জুলাই ১৫, ২০২১, ০৪:০২ পিএম
ছবি : আগামী নিউজ

মানিকগঞ্জঃ জেলার শিবালয়ে ঈদকে সামনে রেখে গরু ব্যবসায়ীরা দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চল থেকে কোরবানির হাজার হাজার গরু আনা শুরু করেছেন। গরু ব্যবসায়ীরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গ্রাম-গঞ্জে থেকে গরু ক্রয় করে আরিচা ট্রাক ঘাটের টার্মিনালে এনে ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে ট্রাকে তুলে ঢাকা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছেন।

আজ বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জের শিবালয়ের আরিচা ঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পশু বহনের ট্রলার থেকে  হাজার হাজার পশু নামাতে। তবে ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে হাট-বাজারে তেমন কোরবানির পশুও দিন দিন বেশি ওঠছে। করোনাভাইরাসের কারনে গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানির পশু কম। যদিও পশু ব্যবসায়ীরা বলছেন, কম দাম দিয়ে কোরবানির পশু ক্রয় করে  কম দামেই বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এবার কোরবানির পশুর দাম এরকমই থাকবে বলে ধারনা করছেন ব্যবসায়ীরা। কারন করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকেই মাংসের চাহিদা কমে যাওয়ায় পশুর দাম অনেক কমে গেছে। পশুর হাটে দেশী গরুই বেশি দেখা যাচ্ছে। দেশী গরুর দামও গত বছরের চেয়ে গরু প্রতি প্রায় ৪-৫হাজার টাকা করে বেশি দিয়ে ক্রয় করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কোরবানির পশু ক্রয় করে আরিচা ঘাটে নৌকায় করে আনতে গরু প্রতি প্রায় এক হাজার বারশ’ টাকা করে খরচ হচ্ছে। এর পর আরিচা ঘাটে এনে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ট্রাক ভাড়া করে গরু নিয়ে ঢাকায় পৌছাইতে গরু প্রতি প্রায় আরও ৭-৮ শত টাকা খরচ হচ্ছে। গরু নিয়ে ঢাকায় পৌছাইতে গরু প্রতি মোট প্রায় ১৬-১৭শত টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তবে কোরবানির পশু ব্যবসায়ীরা জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে কোরবানির পশু নিয়ে ঢাকায় পৌছাইতে এবার এখনও রাস্তায় তেমন কোন ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। একারনে আগেই কোরবানীর পশু নিয়ে ঢাকায় নেওয়া শুরু করেছেন। ঈদের তিন দিন আগে থেকে ঘাটে যানজট না হওয়ার জন্য বিআইডব্লিঊটিসির কতৃপক্ষ ট্রাক পারাপার বন্ধ করে দেন।

সিরাজগঞ্জ জেলার শাজাদপুর এলাকার কোরবানির পশু ব্যবসায়ী গিয়াস হোসেন বেপারী জানান, গরুর খামারী ও কোরবানির পশু পালনকারীরা গরু বিক্রি করছেন কম। কারন কোরবানির পশু পালনকারীরা আরও বেশি দামের আশায় গরু ছাড়ছেন না এখনি। যাও ক্রয় করা হচ্ছে তা নিয়ে ঢাকায় পৌছাইতে অনেক খরচ হচ্ছে। এছাড়া ট্রান্সপোর্টেও অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। ট্রান্সপোর্টে গাড়ী প্রতি ৫-৬টাকা করে বেশি দিতে হচ্ছে। এক প্রকার জিম্মি করে ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা না দেওয়া হলে গরু ঢাকায় নিতে দেন না তারা।

পাবনার কোরবানির পশু ব্যবসায়ী রিপন উদ্দিন বেপারী জানান, কোরবানির পশু কম দাম দিয়ে ক্রয় করে কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ঢাকায় বর্তমানে কোরবানির পশুর মাংস ১৬-১৭হাজার টাকা মন বিক্রি হচ্ছে।

আরিচার ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী আবু সাঈদ ও মোফাজ্জল হোসেন সেন্টু জানান, আরিচায় প্রায় ১০-১২টি ট্রান্সপোর্ট রয়েছে। ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে অতিক্তি টাকা নেওয়া হচ্ছে না। আমরা তাদেরকে লক্ষ লক্ষ টাকা দাদন দিয়েছি।

ওসি ফিরোজ কবির জানান, কোরবানির পশু ব্যবসায়ীরা আরিচা-পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে নিরাপদে পশু নিয়ে ঢাকায় পৌছাতে পারবেন। ঈদ উপলক্ষে কাউকে কোন চাঁদাবাজী করতে দেওয়া হবে না।