নোয়াখালীঃ জেলার হাতিয়া উপজেলার বয়ারচর টাংকির ঘাটের আবদুর রব বেপারি ও তার দুই ছেলেকে নিজ বাড়ি থেকে মধ্য রাতে তুলে নিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগ করে মেঘনা কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে ভূক্তভোগি পরিবার ও ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার (১৫ জুলাই) স্থানীয় টাংকি বাজারে এ সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুর রব বেপারির মেয়ে জান্নাত আক্তার লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, আমার বাবা মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রব এর কাছ থেকে মেঘনা নদীর ভোলা জোন কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা লেঃ এস.এম. তাহসিন রহমান ও সিজি স্টেশন হাতিয়া কোস্টগার্ড কর্মকর্তা লেঃ এ.এস.এম.লুৎফর রহমান মাসিক চাঁদা দাবী করে আসছে । তিনি চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বাবাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী ও হুমকি দিয়ে আসছিল।
অবশেষে ৯ জুলাই শুক্রবার মধ্য রাতে আমাদের বসত ঘরের দরজা ভেঙে আমার বাবা আব্দুর রব বেপারি, আমার স্কুল পড়ুয়া দুই ভাই আব্দুর রহিম ও মোঃরবিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় ঘর থেকে তাদেরকে ধরে মারধর করে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তার পর কোস্ট গার্ড কিছু পুরাতন অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে, তাদেরকে ডাকাতির প্রস্তুতির ঘটনা সাজিয়ে মামলা দায়ের করে। তার গ্রেপ্তারের খবর এলাকা ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে পড়ে যায় কোস্ট গার্ড দল । এ সময় জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে কোস্ট গার্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে জনগণকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে। এ পরিস্থিতিতে সাধারন জনগনের প্রাণ রক্ষার্থে আবদুর রব বেপারি সেচ্ছায় কোস্ট গার্ড সদস্যদের সাথে চলে যেতে বাধ্য হয়। জান্নাত আরা তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘটনায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার,তাদের মুক্তি দাবি ও এসব কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেছেন।
এদিকে মিথ্যা ঘটনায় সাজানো মামলা প্রত্যাহার ও কোস্ট গার্ড কর্মকর্তাদের বিচারের দাবীতে টাংকি বাজারে একই সময়ে মানববন্ধন করেছে বাজারের ব্যবসায়ী ও জেলেরা। মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, আব্দুর রব বেপারি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এঅঞ্চলে ব্যবসা করছেন ও ব্যবসায়ীদের সংগঠনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি টাংকি বাজার মাছ ঘাট ও বাজার কমিটির সভাপতি এবং টাংকি বাজার মসজিদ,মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাকে আমরা কখনো কোন ধরনের অসামাজিক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে দেখিনি। তাকে তার স্কুল পড়ুয়া দুই ছেলেকে সাজানো ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাকে কোস্ট গার্ড কর্মকর্তারা তার বসত বাড়ি থেকে মধ্য রাতে তুলে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকার সকল মানুষ স্বাক্ষী রয়েছে। আমরা আব্দুর রব বেপারি ও তার দুই ছেলের মুক্তি দাবি করছি।
এদিকে মানববন্ধনে জেলেরা অভিযোগ করেন নদীতে মাছ ধরার সময় কোস্ট গার্ড তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানি করে। অনেক সময় মাছ নিয়ে যায়, চাঁদা দাবি করে।চাঁদা না দিলে নানান অজুহাতে মারধর করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন,টাংকি বাজার মসজিদের ইমাম ফজলুল হক, ব্যাবসায়ী মাওলানা সফিক, ব্যবসায়ী মো. জহির উদ্দিন, প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজি চালক মো আলা উদ্দিন প্রমূখ।
এঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার ও বয়বসায়ীদের অভিযোগের বিষয়ে নোয়াখালীর হাতিয়া কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা সিজি লেঃ এ.এস.এম.লুৎফর রহমান সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।