বরিশালঃ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আরও ২ জন রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য আর টি পিসি আর ল্যাবে পাঠোনো হয়েছে।
একই সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে শেবাচিম হাসপাতালের দুইজন ও ঝালকাঠি জেলায় একজনসহ বিভাগে মোট তিনজন মারা গেছেন। এনিয়ে বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ৩১৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
তথ্য নিশ্চিত করে রবিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বিভাগে নতুন করে আরও ৩৪৩ জন মরণঘাতি ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশে দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণের ঢেউ শুরুর পর বরিশাল বিভাগে একদিনে আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড। যা নিয়ে বিভাগে মোট শনাক্ত দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৩৭ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৩৪৩ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরিশাল জেলায় ১২১ জন। এনিয়ে জেলায় মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ১৯৫ জনে। এরপর পিরোজপুরে নতুন ৮২ জন সহ মোট ২ হাজার ৪১৬ জন, ঝালকাঠিতে নতুন ৭৬ জন সহ মোট ১ হাজার ৯০৭ জন, পটুয়াখালীতে নতুন ২৭ জন সহ ২ হাজার ৫৪০ জন, বরগুনায় নতুন ২২ জন সহ মোট ১ হাজার ৪৯২ জন এবং ভোলায় নতুন ১৫ জন সহ মোট ২ হাজার ৮৭ জন। এর মধ্যে বিভাগে এ পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ১৮১ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, গত ১০ দিনের বেশি সময় ধরে প্রতিদিনই এই বিভাগে সংক্রমণ পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে ইতোমধ্যে বিভাগে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এখন লক্ষণ দেখা দিলেই নমুনা পরীক্ষা করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। তবে মরণঘাতি এই সংক্রমণ প্রতিরোধের একমাত্র উপায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির হার বেড়েছে জানিয়ে হাসপাতালের করোনা তথ্য সংরক্ষক জাকারিয়া খান স্বপন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২ জন এবং করোনা ওয়ার্ডে দুইজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে শুধুমাত্র শেবাচিম হাসপাতালেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২১৫ জন এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৫৪৩ জনের মৃত্যুবরণ করেছেন।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ১৩ জন ও করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৩৮ জনসহ মোট ৫১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৪৫ জন ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১৬৫ জন সহ মোট ২১০ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা মহামারির শুরুতে ২০২০ সালের ৯ মার্চ নারায়ণগঞ্জ ফেরত পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার এক শ্রমিক বরিশাল বিভাগের মধ্যে সর্বপ্রথম আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন।