দিনাজপুর ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি: ঔষধ সংকটের শঙ্কা

দিপংকর রায়, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি জুন ২৯, ২০২১, ০৪:০৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরঃ জনসাধারণের অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরা আর স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষায় ভেঙ্গে যাওয়ার শঙ্কায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। আজ গত ২৪ ঘন্টায় ২৯০ টি নমুনা পরীক্ষায় সনাক্ত ১৪৪ জন মৃত্যু ১, সংক্রমণের হার ৪৯.৬০%।

সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুরে উচ্চ মাত্রার করোনার সংক্রমণে গত ১৫ই জুন হতে চলছে লক ডাউন। তবুও কমছে না উচ্চ মাত্রার সংক্রমণ হার।
 
জেলা, উপজেলা, পুলিশ প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সবাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে। এই পরিস্থিতিতেও জনসাধারণের স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা, বাজারগুলোতে মুখে মাস্ক ছাড়াই চলছে বেচাকেনা, নির্বিগ্নে জনসমাগম নিয়েই চলছে সামাজিক অনুষ্ঠান (বিয়ে, বৌভাত, আকিকা, জন্মদিন ইত্যাদি)।
 
সব জায়গায় অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরা, বিভিন্ন হাটে বাজারে লক্ষ্য করা যায় নেই অনেকের মুখে মাস্ক, কেউবা রেখেছে পকেটে আর গলায় ঝুলিয়ে ! চায়ের কাপে করোনা কিছুই না সবই সৃষ্টিকর্তার হাতে বিধিনিষেধের তোয়াক্কা নেই। কেউবা করছে সরকারের লকডাউন লকডাউন আর স্কুল কলেজ বন্ধে তুলোধুনো আরও কত কি !
 
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে করোনার মৃদু উপস্বর্গের লক্ষন জ্বর সর্দি কাশি গ্রামীণ অঞ্চলে প্রায় ঘরে ঘরে। এমনও আছে পরিবারের সব সদস্যই বা ২/৩ জন এক সংগেই জ্বর সর্দি কাশিতে ভুগছেন।  
 
কয়েক দিন যাবৎ বিভিন্ন অঞ্চলের ঔষুধের দোকান গুলোতে দেখা যায় জ্বর সর্দি কাশির ঔষুধের ক্রেতাই বেশি। সাধারণ বা সিজিনাল ফ্লু ভেবে কেউ করছে করোনা টেষ্ট। 
 
কয়েকজন পল্লী চিকিৎসক ও ঔষুধ ব্যবসায়ীর কথা বললে তারা আগামী নিউজকে জানান,  এখন আতঙ্কে করোনা উপসর্গের জ্বর সর্দি কাশির রোগির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায়। কিছুদিন আগেও জ্বর সর্দি কাশির এতো রোগী বা ক্রেতা ছিল না। এখন জ্বর সর্দি কাশির ঔষুধের ক্রেতা বেড়ে যাওয়ায় এখন(এন্টিবায়োটিক ও প্যারাসিটামল) জাতীয় ঔষধ সংকটে। পাওয়া যাচ্ছে না এন্টিবায়োটিক ও প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ ( নাপা, নাপা এক্সটেন্ড, নাপা রেপিড, নাপা এক্সট্রা ইত্যাদি) । আবার কিছু এন্টিবায়োটিক জাতীয় ঔষধ পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে ।   
 
দোকানদার সেজে একজন মেডিকেল প্রমোশন অফিসার কে ফোন করলে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধের চাহিদা দিলে তিনি সবিনয়ে ক্ষমা চেয়ে বললেন তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাদের কাছে এখন মজুত নেই  তবে ২/৩ দিনের মধ্যেই কোম্পানি ( ঢাকা) থেকে আসলেই জানাবেন।
 
একাধিক প্রতিবেদনের স্বার্থে জেলা সিভিল সার্জন ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ মো:আব্দুল কুদ্দুস আগামী নিউজকে বলেছেন জেলায়  করোনা সংক্রমণ কমিউনিটি ট্রান্সমিশনে ছড়িয়ে পড়ায় তিনি নিজেও শঙ্কিত। উচ্চ সংক্রমণ হার বেশ কিছুদিন যাবৎ যা লকডাউন দিয়েও নিয়ন্ত্রণে আসছে না শুধু মাত্র জনসাধারণের লকডাউন উপেক্ষা আর অসহযোগিতার কারনে। করোনা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানালেও তবে আইসিইউ শয্যা কম থাকায় রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সংকটের কথা। অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত প্রায় ১৫০০ দুটি অক্সিজেন প্লান্ট চলমান, সাধারণ শয্যা ২৬০ টি। তিনি বারবার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন লকডাউন সফল করলে নতুবা এমনটা চললে ভয়াবহ সংকটে পরবে জেলা পরবর্তীতে কোন উপায় থাকবে না।