কুষ্টিয়াঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ তুলে তার দ্রুত বিচারসহ ৬দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২০ জুন) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এসময় প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীকে সাইবার বুলিংয়ের মাধ্যমে উত্ত্যক্তকরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ থাকার পরেও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিচারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কালক্ষেপণ করছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি- অভিযুক্ত ফারুকের অতি দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণ, উপযুক্ত প্রমাণ থাকা সত্বেও প্রশাসনের টালবাহানা বন্ধকরণ, অনতিবিলম্বে শাস্তি না হলে ইউজিসি ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর অভিযোগ প্রেরণ, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ, সাইবার বুলিং রোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান এবং ক্যাম্পাসে যৌন নির্যাতন সেলের কার্যকারিতা নিশ্চিতকরণ।
মানববনন্ধে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ফারুক হোসেন দিনের পর দিন তার ব্যাচমেট, সিনিয়র ও জুনিয়র মেয়েদের উত্যক্ত করেই যাচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সেখানে প্রশাসন টালবাহানা ও কালক্ষেপণ করেই চলেছে। অপরাধীকে বাঁচানের জন্য সবরকম পন্থা অবলম্বন করছে তারা। এক ফারুকের বিচার না হলে বাকি ফারুকরা আরো মাথাচারা দিয়ে উঠবে। ইবি প্রশাসন অবিলম্বে বিচার নিশ্চিত না করলে আমরা ইউজিসি ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর এর বিচার চাইবো।'
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত ১১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এনিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হুমকির শিকার হলে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগপত্রে কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাজে মন্তব্য করা, ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক নেতা এবং বড় ভাইদের ভয় দেখিয়ে ক্ষতি করার হুমকি, ছবি বিকৃতি করে ফেক ফেসবুক আইডি খুলে হেনস্তা এবং ইনবক্সে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাঠানোর অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২০জন সিনিয়র, জুনিয়র ও ব্যাচমেট মেয়েদের নানা ভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠে।
এসব ঘটনার দীর্ঘ ১ মাস ৮ দিন পর গতকাল শনিবার ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর শাহ আলম কবির প্রামাণিক এবং সহকারী প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর শাহেদ আহমেদ।
এবিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, 'আজ এ সংক্রান্ত একটি চিঠি হাতে পেয়েছি। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।