সিলেটের নতুন কারাগারে প্রথম ফাঁসি

নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৮, ২০২১, ০৮:৫৭ এএম
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটঃ নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রথমবারের মতো ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাত ১১টায় সিলেটের বাদাঘাটস্থ নতুন এই কারাগারে ঢাকার কাশিমপুর কারাগার থেকে আসা জল্লাদ শাহজাহান লিভার টেনে হবিগঞ্জের সিরাজুল ইসলাম সিরাজের (৫৫) ফাঁসির রায় কার্যকর করেন।

কারাগার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জের রাজনগরের কবরস্থান এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ২০০৪ সালের ৬ মার্চ স্ত্রী সাহিদা আক্তারকে শাবল ও ছুরি দিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনার পরদিন হবিগঞ্জ সদর থানায় সাহিদার বড় ভাই বাদি হয়ে হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানী শেষে এই মামলায় ২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ সিরাজের ফাঁসির আদেশ দেন। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।

এই রায়ের বিরুদ্ধে সিরাজ হাইকোর্টেও আপিল করেছিলেন, তবে আদালত নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। পরে ডেথ রেফারেন্সের (নং-১৮/০৭) আলোকে ২০১২ সালের ১ আগস্ট জেল আপিল নিষ্পত্তি করে আগের রায় বহাল রাখেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ফের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেও জেল পিটিশন (নং-২৬/১২) দেওয়া হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর সিরাজের আপিল বাতিল করে ফাঁসি বহাল রাখেন।

আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ১৬ বছর ৩ মাস পর স্বামী সিরাজের ফাঁসি কার্যকর করা হলো। অবশ্য ফাঁসির হাত থেকে বাঁচতে গত ২৫ মে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি, কিন্তু তার আবেদন মঞ্জুর হয়নি। পরে সকল আইনী প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় আজ রাতে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।

প্রসঙ্গত, ১৭৮৯ সালে সিলেটের ধোপাদিঘীর পাড়ে নির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিদের স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় নতুন কারাগারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাটে নতুন কারাগার নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর নতুন কারাগারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কারাগার সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-১ হিসেবে পরিচয় পায়। পুরনো কারাগারের পরিচয় হয় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ হিসেবে। নতুন কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধনের আড়াই বছর পর বৃহস্পতিবার রাতে এ কারাগারে প্রথমবার ফাঁসি কার্যকর হয়। রায় কার্যকরের পর মেডিকেল পরীক্ষা শেষে গভীর রাতেই নিহতের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।