নেত্রকোণাঃ জেলার মদন উপজেলায় কাইটাইল ইউনিয়নের বারড়ী (সুতিয়ার পাড়) গ্রামে সাতটি পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। প্রায় এক মাস ধরে অবরুদ্ধ রাখার দাবী ভুক্তভোগি ওই সাত পরিবারের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বারড়ী (সুতিয়ার পাড়) গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে নূর আমীনের সাথে প্রতিবেশী মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে সাদ্দামের দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফা শালিসী বৈঠক হলেও কোনো মীমাংসা হয়নি। বিগত বৈশাখ মাসে তাদের মধ্যে তর্কবির্তক হলে প্রতিপক্ষ সাদ্দাম টিনের বেড়া দিয়ে ওই সাতটি পরিবারে লোকজনের যাতায়াতে একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়।
রাস্তা না থাকায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ওই পরিবারের লোকজন। ঘরের সামনে টিনের লম্বা বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় এবং ঘর হতে বের হওয়ার একটি রাস্তা হওয়ায় বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না সাতটি পরিবারের লোকজন। তবে বাড়ি থেকে বের হওয়ার বিকল্প রাস্তা না থাকায় কলা গাছের ভেলায় পুকুরের মধ্যে দিয়ে চলাচল করছে ওই সাত পরিবারে লোকজন।
অভিযোগকারী নূর আমীন জানান, আমরা পাঁচ ভাই ও দুই চাচা মিলে একই বাড়িতে বসবাস করি। আমরা সবায় পেশায় অটো রিক্সা চালক। পাশের বাড়ির সাদ্দামের সাথে আমাদের বাড়ির সামনের পুকুর নিয়ে বিরোধ আছে। বৈশাখ মাসে সাদ্দামের সাথে তর্ক হলে সে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ায় অটো রিক্সা নিয়ে বাড়িতে আসতে পারি না। কলা গাছের ভেলা দিয়ে পুকুরের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করছি। আমার ভাই মিলনের অটো রিক্সাটি বাড়িতে আনা যায় না তাই পাশের বাড়ির শামছুর বাড়িতে রাখি। ছোট ভাই রোকনের অটো রিক্সাটি এক মাস ধরে ঘরেই পড়ে আছে। আয় রোজগাড়ের পথ বন্ধ। কিস্তি ঋণ নিয়ে রিক্সা কিনেছিলাম। ঋণের টাকার চাপে তিনটি রিক্সা বিক্রি করে দিয়েছি। এভাবে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকলে কিভাবে পরিশোধ করবো ঋণ আর কি দিয়ে চালাব পরিবার। এসব কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
প্রতিবেশী সাদ্দামের মা রেখা আক্তার ও সাদ্দামের ভাই সানোয়ার বলেন, আমাদের সাথে তাদের জমি নিয়ে র্দীঘদিন ধরে ঝামেলা আছে। এ নিয়ে তারা আমাদের সাথে প্রায় সময়েই ঝগড়া করে আবার আমাদের জায়গা দিয়ে অটোরিক্সা আনা-নেয়া করে। আমাদের নিজেদের জায়গায় আমরা বেড়া দিয়েছি তাদের জায়গায় তো দিইনি।
এ ব্যাপারে কাইটাইল ইউপি চেয়ারম্যান সাফায়াত উল্লাহ রয়েল জানান, নূর আমীন ও সাদ্দামের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তবে রাস্তায় বেড়া দিয়েছে এমন বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিদের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করবো।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) উজ্জল কান্তি সরকার জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, বিষয়টি জেনে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।