নাটোরঃ করেনাকালে স্কুল- কলেজ- মাদ্রাসা বন্ধ থাকা এবং মানুষের কর্মহীন হয়ে আয় কমায় বেড়েছে শিশু শ্রম। তবে শিশু শ্রমে কি পরিমান শিশু যুক্ত হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানের কাছ থেকে।
সরেজমিনে নাটোরের বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে নানা কর্মস্থানে শিশুদের যুক্ত হওয়ার এমন প্রমাণ পাওয়া যায়।
বাগাতিপাড়ার জিগরী বাজারে দেখা যায়, এক শিশু দোকান ঝাড় দিচ্ছে। জানতে চাইলে সে জানায়, পরিবারের সমস্যা থাকায় সে দোকানে চাকুরী করছে।
সদর উপজেলার ভাটোদাঁড়া গ্রামের রহমত আলী জানান, তার দুই ছেলে রাশেদ ও শাহেদ স্থানীয় দিঘাপতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করত। করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার পাশাপাশি তার কর্ম সুযোগ কমে যাওয়ায় পারিবারিক ভাবে তিনি অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েন। এমন অবস্থায় দুই ছেলেই রাজমিস্ত্রীর যোগালদার হিসেবে কর্মে যোগ দিয়েছে।
লালপুর বাজারের পাশেই রাস্তা দিয়ে ভ্যান চালিয়ে যাচ্ছিল এক শিশু। জানতে চাইলে সে জানায়, বাবা অসুস্থ্য থাকায় পরিবারের প্রয়েজনেই সে ভ্যান চালাচ্ছে। সে স্থানীয় স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে। অনেকেই মোবাইল গেম এমনকি নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। এমন অবস্থায় অনেক অভিভাবকই সন্তানদের বিভিন্ন কর্মে নিয়োগ করছেন।
নওপাড়া ওসমানগণি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা বানু জানান, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক অভিভাবকই অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে প্রকারান্তরে তাদেরকে শিশু শ্রমে নিয়োগ করে চলেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিভিন্ন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে তিনি অল্প বয়সে বিয়ে হওয়া আর করোনাকালে শিশুশ্রমে যুক্ত হওয়া শিশুদের সংখ্যা জানার চেষ্টা করছেন। এব্যাপারে কাজ চলমান।
জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনার আগে শিশুশ্রম বন্ধে তারা বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মকান্ড করতেন। করোনায় সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও তার সঠিক পরিসংখ্যান তার কাছে নেই।