২০ বছর পর স্বজনদের ফিরে পেলো দুলাল

মোক্তার হোসেন, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি মে ২৩, ২০২১, ০৬:০৭ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

গাজীপুরঃ গত ২০ বছর আগে নিখোঁজ হওয়া ব্যাক্তিকে ফিরে পেয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাবো এলাকায় এক পরিবারের সদস্যরা উচ্ছ্বসিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের কল্যাণে নিখোঁজ ওই ব্যাক্তিকে তারা ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার সরাইল উপজেলা থেকে ফিরে পেয়েছেন। ফিরে পাওয়া ব্যাক্তি দুলাল মিয়া (৪২) শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাবো এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে।

দুলাল মিয়ার বড় ভাই আবুল হোসেন বলেন, প্রায় ২০ বছর পর তার ভাইকে ফিরে পেয়ে এখন তারা অনেক খুশি। ইতোমধ্যে যদিও সে পরিবারের কিছু সদস্যকে হারিয়েছে তারপরও তাকে পেয়ে পরিবারের সকল সদস্যরা ভীষণ খুশি হয়েছেন। নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে অবশেষে কোনো দুর্ঘটনায় তার নিশ্চিত মৃত্যু হয়েছে ভেবেছিলেন। তাদের সে ধারণা ভুল পর্যবসিত হওয়ায় তারা ভীষন আনন্দিত।

আবুল হোসেন বলেন, গত প্রায় ২০ বছর আগে শ্রীপুর বাজারে একটি খাবার হোটেলে কাজ করতেন দুলাল মিয়া। সে কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। হঠাৎ কোনো এক দুপুরের পর থেকে সে নিখোঁজ হয়। বছর তিনেক পর্যন্ত বিভিন্ন উপায়ে তাকে বহু খোঁজাখুঁজি করা হয়। থানায় সাধারণ ডায়েরী বিভিন্ন মাধ্যমে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়।

তিনি জানান, তার ভাই দুলাল নিখোঁজের সময় তাদের বাবা ছিলেন না। তবে মা বেঁচেছিলেন। তাদের মা মারা যান ২০১৬ সালে।দুই ভাই এবং এক বোনের মধ্যে সে ছোট।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী ও দুলালের আত্মীয় আমীরুজ্জামান জানান, এসএসসি ব্যাচ-৯২ এর এক ব্যাক্তির ফেইসবুক আইডিতে দুলালের বিষয়ে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। পরে সাদিকুল নামের এক ব্যাক্তির মাধ্যমে ওই আইডির সুত্র ধরে দুলালের সকল খবরা-খবর নেওয়া হয়। রোববার ভোরে ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সূর্যকান্দি গ্রাম থেকে দুলালকে চিহ্নিত করা হয়।

এসময় ওই এলাকার শত শত মানুষ জড়ো হয়। অনেকের সাহায্য সহযোগিতায় সে একাধিক মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অর্থকড়ি এলাকার গৃহিণীদের কাছে জমা করে রাখত। “আমরা দুলালকে চিহ্নিত করে নিয়ে অসার সময় ওইসব নারীরা তাদের কাছে রাখা দুলালের অর্থকড়ি বাবদ ১৫ হাজারের বেশি টাকা ফেরত দিয়ে যায়।”

সরাইলের সূর্যকান্দি এলাকার ইউপি সদস্য ফজলুল হক জানান, দুলাল প্রায় ২০ বছর আগে থেকে সরাইলের বিভিন্ন এলাকায় ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াতো। অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সে অনেকের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে চেয়ে চিন্তে দিনাতিপাত করত। বিয়ে সাদী না করায় এলাকার যেখানেই ইচ্ছা সেখানেই সে রাত্রি যাপন করত।