ভোগান্তি নিয়েই ফিরছে মানুষ

হাসান ভূঁইয়া, সাভার প্রতিনিধি মে ২০, ২০২১, ০৮:১৮ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

ঢাকাঃ চলছে করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) দ্বিতীয় ঢেউ। হটাৎ আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়ায় একের পর এক লকডাউনের কারণে বন্ধ দূর পাল্লার বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন। সরকারীভাবে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার বিধিনিষেধ থাকলেও সাধারণ মানুষ তা মানেনি। ঈদের আগে অফিস ছুটি হওয়া মাত্রই যে যেভাবে পেরেছে ছেড়েছে ব্যস্ততম শহর ঢাকা। কাজের সন্ধানে আসা মানুষগুলো নাড়িরটানে বাড়ি যাওয়ায় জনশূণ্যতার কারনে ফাঁকা হয়ে যায় শিল্পাঞ্চল।

ঢাকার উপকণ্ঠ আশুলিয়ার কথাই বলছি, যাকে শিল্পাঞ্চল হিসেবে বেশি চিনে মানুষ। এখানে গার্মেন্টসের সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ পোশাক কারখানায় কর্মরত।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শত দূর্ভোগ পেরিয়ে ঢাকায় ফেরা শত শত মানুষ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য গাড়ির অপেক্ষা করছে বাইপাইল এলাকায়। বাইপাইলে পরিবহণের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা বেশির ভাগ মানুষ এসেছে উত্তরবঙ্গ থেকে। অপেক্ষারত মানুষদের মধ্যে কেউ কেউ পায়ে হেঁটে নিজ গন্তব্যের রওনা হয়েছে। কেউবা আবার রিকশা যোগে যাচ্ছে।

উত্তরবঙ্গের নিলফামারী থেকে আসা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা গরীব মানুষ, এক আল্লাহ ছাড়া আমাদের কেউ নেই, সরকার তো গরীবের দুঃখ-কষ্ট বুজে না। কথা শেষে না হতেই মাথার বস্তা তুলে হাটা শুরু করে।  

রংপুর থেকে আসা ইয়াসিন নামের পোশাক শ্রমিক জানান, তার ফ্যামিলির সবাই গ্রামের বাড়িতে থাকে, তাই এক প্রকারের বাধ্য হয়েই কারখানা ছুটি হওয়াই বাড়ি চলে গিয়েছে সে।

ইয়াসিন আরও বলেন,  আমি ঈদের আগে আমার বেতন বোনাস বাবদ পনেরো হাজার টাকা পেয়েছি, এখানকার ঘর ভাড়া, পরিবারের সকলের জন্য কেনাকাটা, দোকান বাকি দিয়ে আমার কাছে তিন হাজার টাকা ছিল মাত্র। লকডাউন থাকার কারনে আমাদের লাইনের গাড়ি ও বন্ধ ছিল। তাই অনেক কষ্ট করে বিভিন্ন উপায়ে বাড়তি ভাড়া গুনে বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরিবারের সাথে ঈদ করে ঢাকায় ফিরলাম। আসার সময় হাঁস-মুরগী বিক্রি করে টাকা নিয়ে আসছি। একবুক কষ্ট নিয়ে থেমে থেমে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ইয়াসিন।

এটা শুধু এক ইয়াসিনের কথা নয়, আশুলিয়ার বেশি ভাগ শ্রমিকদের এই পরিনতি।