মানিকগঞ্জঃ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের শর্তে গণপরিবহনে ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তবে সে সিদ্ধান্ত মানছে না মানিকগঞ্জের অধিকাংশ গণপরিবহন। বিভিন্ন গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কথা থাকলেও কোন কোন গাড়িতে দাঁড়িয়ে আবার কোনো কোনো জায়গায় দাঁড়িয়ে যাত্রীরা গণপরিবহনে চলাচল করছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) জেলার শিবালয় উপজেলার আরিচা বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া নিয়ে প্রাইভেটকারে করে যাত্রী বহন করছে স্থানীয় কিছু পরিবহন দালাল ও দুষ্কৃকিকারীরা। এছাড়া সেলফি, শুভযাত্রাসহ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলরত বিভিন্ন বাস সার্ভিস ও সিএনজিতে করে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নিয়ে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। গণপরিবহন সঙ্কটের অজুহাত দেখিয়ে প্রায় প্রতিটি গাড়িতেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ও দ্বিগুণ যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
এছাড়া মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড হতে সিংগাইর-হেমায়েতপুর সড়কে সিএনজি, প্রাইভেটকার, হ্যালো বাইক, থ্রি হুইলার সহ বিভিন্ন গাড়িতে সব সীট ভরে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে কয়েকগুণ ভাড়ার বিনিময়ে। একই চিত্র দেখা গেছে মানিকগঞ্জের অন্যান্য আঞ্চলিক মহাসড়কেও।
মানিকগঞ্জের বিভিন্ন আঞ্চলিক মহাসড়কের চলাচলরত একাধিক যাত্রীরা জানান, সরকার ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ালেও গাড়িতে অনেক বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আর গাড়ির সংকটও অনেক বেশি। প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়ার বিনিময়ে গাড়িতে চলাচল করতে হচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হচ্ছেনা।
শিবালয়ের আরিচা থেকে ধামরাইয়ের বারবাড়িয়া পর্যন্ত চলাচলরত সেলফি পরিবহনের চালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী আরিচা থেকে বারবারিয়া পর্যন্ত গাড়ি চলে। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই যেভাবে যাত্রী পরিবহন করছে ও ভাড়া নিচ্ছে আমরাও সেভাবেই নিচ্ছি।
যাত্রীবাহী বাস সার্ভিস শুভযাত্রা পরিবহনের এক যাত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে গাড়ি পাচ্ছিলাম না। কিছুক্ষণ আগে গাড়ি পেলেও ভাড়া দিগুণ। আসলে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনে সরকার নির্দেশ দিলেও যানবাহন তো দ্বিগুণ হয়নি, ফলে গাড়ির সংকট বেড়েছে।
এ ব্যাপারে জেলার বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, সকল পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকদের বলা হয়েছে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলাচল করতে। কেউ যদি আইন অমান্য করে তাকে জরিমানাসহ শাস্তির ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। যে অন্যায় করবে তার দায় তাকেই নিতে হবে।
এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম রুহুল আমিন রিমন বলেন, গণপরিবহনের অনিয়ম বন্ধে আমরা গতকালও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি, আজও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। জনস্বার্থে মোবাইল কোর্টের অভিযান অব্যাহত থাকবে।