বগুড়াঃ জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে দেশি খেজুর গাছে কাঁদিতে ঝুলছে কাঁচা খেজুর। কাঁদিতে থোকায় থোকায় ঝুলানো কাঁচা খেজুরের সবুজ রঙ বাড়িয়েছে প্রাকৃতিক শোভা।
উপজেলার বিভিন্নস্থানে পতিত জমি, পুকুর পাড়, জমির আইল, জঙ্গলে প্রকৃতিতে সবুজ শোভা যোগকারী ফলন্ত খেজুর গাছের দেখা মিলছে। অনেকে খেজুর গাছের দিকে তাকিয়ে ছোটবেলার স্মৃতি রোমন্থন করছেন।
শেরপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন খেজুর গাছ কে ঘিরে ছোটবেলার স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, দলবেধেঁ ছেলেমেয়েরা মিলে গাছ থেকে কাঁচা খেজুর পেড়ে আনতাম। কাঁচা খেজুর'ই চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতাম। আবার খেজুর পাকার মৌসুমে গাছের নিচে সারাদিন ব্যাপি খেজুর কুড়াত ছেলে মেয়েরা। গ্রামীন জীবনে খেজুর গাছের সাথে এমন স্মৃতিগুলো নেই তেমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দায়।
দুপচাঁচিয়া জাহানারা কামরুজ্জামান কলেজের কৃষি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক দিনেশ চন্দ্র বসাক বলেন, দেশি খেজুর পাকতে শুরু করে জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে। সবগুলি খেজুর একসাথে পাকে না। কাঁদিতে অল্পবিস্তর খেজুর প্রত্যেকদিন পেকে পেকে ঝরে পড়ে। তবে খেজুর পরিপূর্ণ হলুদ হয়ে গেলে কাঁদি সংগ্রহ করে তাতে লবন- পানির ছিটা দিয়ে রাখলে দু-তিন দিনেই খেজুর পেকে যায়।
তিনি আরও বলেন, দেশি খেজুর গাছের এদেশেই জন্ম, এদেশেই বিস্তার। খেজুর গাছ প্রাকৃতিকভাবে জন্মে এমনিতেই বেড়ে ওঠে। অবশ্য পাখি এবং কাঠাবিড়ালী খেজুর গাছের চারা বিস্তারে মূল ভূমিকা পালন করে। খেজুর গাছের যত্ন নিতে হয়না, রোগ বালাইও তেমন নেই। বিক্ষিপ্তভাবে সারাদেশেই খেজুর গাছ জন্মে। উপকূলীয় অঞ্চল এবং সুন্দরবনেও খেজুর গাছ জন্মে। তবে যশোর, নাটোর, রাজশাহী এবং ফরিদপুরে খেজুর গাছ ভাল জন্মে।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, দেশি খেজুর মানবদেহের জন্য শক্তিবর্ধক ফল। এছাড়া দেশি খেজুর হৃদরোগ, জ্বর এবং পেটের পীড়ায় উপকারী ফল। দেশি খেজুরে লৌহ জাতীয় প্রচুর পরিমানে খনিজ উপাদান আছে।