ভালবাসার সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরলেন বগুড়ার মেয়ে

নাহিদ আল মালেক, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি মে ১২, ২০২১, ০৮:২২ পিএম
সংগৃহীত

বগুড়া: লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ। চাকুরীসুত্রে ঢাকায় থাকেন। বাড়ি বগুড়ার সান্তাহারে। উপায় না পেয়ে সিন্ধান্ত নেন ভালবাসার বাই সাইকেল চালিয়েই ২৫৫ কিলোমিটার দূরের বাড়ি ফিরবেন। স্বপ্ন আর পরিশ্রম যে সার্থকতা বয়ে আনে তার জ্বলন্ত প্রমাণ বগুড়ার মেয়ে এপি তালুকদার।

জানা গেছে, বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার পৌর শহরের রথবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম তালুকদারের মেয়ে মৌসুমি আক্তার এপি ঢাকার বনানীর ‘চিটাগাং গ্রামার স্কুল ঢাকা’ নামের একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি পেয়ে বাড়ি ফেরা নিয়ে চরম দুঃ শ্চিন্তায় পরেন। 

এরপর গত সোমবার (১০ মে) বিকেল ৪ টার দিকে ঢাকার গোলাপবাগ থেকে বাইসাইকেলে তিনি রওনা দেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগরে তার সাথে যোগ দেন সিরাজগঞ্জের মীর রাসেল নামের অনার্সের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। এরপর সেখান থেকে তারা দু’জনে একটানা বাইসাইকেল চালিয়ে রাসেলের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ভূঁইয়াগাতি এলাকায় পৌঁছায়। রাসেল রাড়ি ফিরলে এপি সেখানে একা হয়ে যান। 

এবার তিনি একাই টানা বাইসাইকেল চালিয়ে পৌঁছে য়ান বগুড়ায়। বগুড়াতে এসে যাত্রাবিরতির পর তার বান্ধবী মালার বাসায় সেহরি শেষে সকাল ৬ টায় তিনি সান্তাহারের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। কিন্তু বৃষ্টির কারনে এবার যাত্রা কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও থেমে যাননি তিনি। ১৪ ঘন্টা চালিয়ে পরের দিন মঙ্গলবার (১১ মে) সকালে পৌঁছে যান সান্তাহারে। এভাবেই তিনি বাইসাইকেলে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন।

এপি তালুকদার জানান, লকডাউনের কারণে ট্রেন ও দূরপাল্লার বাস বন্ধ। গণপরিবহনে গাদাগাদি করে বাড়ি ফিরতে হবে। তাই তিনি তার ‘ভালোবাসা’ বাইসাইকেলে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। এ যাত্রা ছেলেদের জন্য সহজ হলেও মেয়েদের জন্য দূরহ। শুধু নাড়ির টানে রোজা রেখে ও বৈরি আবহাওয়া পেরিয়ে তার শখ পূরণ করেন। মনে প্রচণ্ড শক্তির কারণে রাতে মহাসড়কে একা সাইকেলে চালালেও তার মনে ভয় আসেনি।

তিনি জানান, মহাসড়ক ছয় লেন হওয়ার কারণে তার সাইকেল চালাতে তেমন সমস্যা হয়নি। তবে যমুনা সেতুতে অনুমতি না থাকায় তিনি তার সহ-সাইক্লিস্ট কার্গোতে পার হয়েছেন।