দুপচাঁচিয়ায় শুকিয়ে যাচ্ছে জলাশয়: দেশি মাছের আকাল

মতিউর রহমান, দুপচাঁচিয়া ( বগুড়া) প্রতিনিধি মে ৭, ২০২১, ০৫:৪৪ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

বগুড়াঃ জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়  রোদের তীব্রতা এবং খরার কারনে ছোট জলাশয়গুলি শুকিয়ে যাচ্ছে। জলাশয়ের তলদেশে জমে থাকছে হাটু পানি। জলাশয়ের তলদেশে জমে থাকা ওই পানিগুলো সেচ দিয়ে মিলছে না তেমন সংখ্যক দেশি মাছ।

দুপচাঁচিয়া উপজেলায় দেশি মাছ কমে যাওয়ার তথ্যানুসন্ধান করে বিভিন্নজনের সাথে কথা হয় আগামী নিউজের।  অনেকেই ফসলের জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ কে  মূলতঃ দায়ী করেন দেশি মাছ হারিয়ে যাওয়ার কারন হিসাবে।

উপজেলার মাজিন্দা গ্রামের মৎস্যচাষী কামরুজ্জামান আগামী নিউজকে বলেন, ফসলের মাঠে কীটনাশক প্রয়োগের ফলে দেশি মাছের বংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। তাছাড়া বানিজ্যিকভাবে মাছচাষ বেড়ে যাওয়ার ফলেও পুকুরগুলিতে দেশি মাছ কমে গেছে। তবে বানিজ্যিকভাবেই আবার শিং, মাগুর, পাবদা মাছের চাষ করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে ডিমওয়ালা দেশি মাছ ধরে থাকে  শিকারীরা। মা মাছ কমে যাওয়ার কারনে  দেশি মাছ হারিয়ে গেছে। তাছাড়া ক্যারেন্ট জালেও অহরহ আটকা পড়ে দেশি মাছের বিস্তার কমে গেছে।

আমশট্ট গ্রামের মৎস্যজীবি আইন মিয়া আগামী নিউজকে বলেন, একসময় ছোট ছোট জলাশয়, ডোবা, নিচু জমিতে মিলত প্রচুর দেশি মাছ। গ্রামের ভিতর মাছ শিকার করেই আমাদের জীবন সংসার চলত স্বাচ্ছন্দে। এখন মাছ শিকার করে জীবন সংসার চলে না। ডোবা, নিচু জমিতে আর আগের মত মাছ মিলে না।

মোড়গ্রামের ভোক্তা নারায়ন চন্দ্র মন্ডল লালু আগামী নিউজকে বলেন, 'মাছ ভাতে বাঙালি' এই কথাটি আমাদের জন্য শতভাগ সত্যবাণী ছিল। দেশি মাছ সহজলভ্য থাকায় ভাতের সাথে নিয়মিত মিলত মাছ। জলাশয়, ডোবা, নিচু জমিতে সহজেই মিলত মৌরলা, ডানকানি, চিংড়ি, গুচি, শিং, মাগুর, শোল, পাবদা, টেংরা ইত্যাদি দেশি প্রজাতির মাছ। এখন কিছু জাতের দেশি মাছ বানিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হলেও বাজারে দেশি মাছের দাম থাকে নাগালের বাইরে। বাঙালির দেশি মাছ এখন এলিট শ্রেণিদের খাবার।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দেশি মাছের সংকট স্বীকার করে আগামী নিউজ কে বলেন, এবছর খরার প্রাদুর্ভাব থাকায় ভরা মৌসুমেও মিলছে না দেশি মাছ। তাছাড়া নির্বিচারে মাছ শিকার দেশি মাছের অস্তিত্ব সংকটের জন্য দায়ী। জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করার ফলে দেশি মাছের অভয়াশ্রম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। দেশি মাছ কে আগামী প্রজন্মের জন্য টিকিয়ে রাখতে  সরকারি ও বেসরকারিভাবে নতুন করে উদ্যোগ নিতে হবে।

আগামীনিউজ/এএস