কুষ্টিয়াঃ তীব্র তাপদাহে ও দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়া কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ লিচুর আবাদ হয়েছে। তবে গতবারের তুলনায় এবছর লিচুর ফলনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন লিচু চাষি ও বাগান মালিকরা। গাছে দিন-রাত সেচ দিয়েও কোনো ফল পাইনি বলে জানান একাধিক লিচু চাষি ও বাগান মালিকরা। লিচু চাষি ও বাগান মালিকরা বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন। অনেক চাষি ও বাগান মালিকের স্বপ্নও ভেঙে যাচ্ছে লিচু চাষ নিয়ে। ফলে এখন থেকেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে লিচু চাষি-বাগানীদের মাথায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে তথ্যে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের উপজেলার লিচু চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ হেক্টর। এ বছর কৃষকরা ১০৩ হেক্টর জমিতে লিচু আবাদ করেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ।
সোমবার (৩ মে) দুপুরে খোকসা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাগানে গিয়ে দেখা যায় বাগান পরিচর্যা করছেন এবং আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় এবার লিচুর ফলন ভালো হয়নি বলে জানলেন লিচু চাষীরা।
কথা হয় গোপগ্রামের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের ছেলে তৌহিদুর রহমান রাজুর সাথে তিনি বলেন, ২০ বিঘা জমির উপর লিচু বাগান। প্রায় ৫'শ টি লিচু গাছের মধ্যে এবার মাত্র ১৫/১৬ টা গাছে লিচু এসেছে। গত বছরের প্রায় লক্ষাধিক টাকার লিচু বিক্রি করেছিলাম কিন্তু এবার ফলন খুবই খারাপ হয়েছে। এবারের হাজার বিশেক (বিশ হাজারের মত) টাকা লিচু বিক্রি হবে কি না এই নিয়ে চিন্তিত এই বাগান মালিক। তিনি আরো বলেন, বছরকার ফল লিচু, একবারই মাত্র বিক্রি করার সুযোগ আসে। ফলতো লিচুর ফলন যদি সঠিক না হয় তাহলে আমাদের বাগানের পরিচর্যায় পুরাটাই লস যাই।
লিচু ভালো না হওয়ার কারণ শুনতে চাইলে এই বাগান মালিক তিনি আরো বলেন, যখন লিচু গাছে মকুল আসে তখন আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় প্রচন্ড তাপদাহে ও সময় মত বৃষ্টি না থাকায় মকুল ঝরে পড়েছে। তবুও গাছে দিন-রাত পানির সেচ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ জন্য এবারে লিচুর ফলন ভালো হয়নি বলে মনে করেন এই বাগান মালিক।
একই গ্রামের রোজিনা খাতুন তিনিও একই কথা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এ বছর লিচুর মুকুল তুলনামূলক কম। এ বছর ফলন কম হওয়ার কারণ মূলত আবাহাওয়া আমার মনে হয়। লিচুর ফলন কম হওয়ায় লিচু চাষের সঙ্গে জড়িত বাগান মালিকেরা চরম আর্থিক দুরবস্থার শিকারে পড়বেন বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, এখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো বাকি আছে। কী হবে জানি না। যদি ঝড়ে বাগানে ক্ষতি হয় তবে আমাদের মতো বাগানী যারা আছে তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা জানান, এ বছর লিচুর ফলনে বিপর্যয় হয়নি এখনো চলমান রয়েছে। প্রচন্ড খরা(তীব্র তাপদাহে ) কারণে কিছুটা ফলন নষ্ট হতে পারে। তবে এবারে লিচু লক্ষ্যমাত্রার থেকে দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে লিচুর আবাদ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করছেন বলেও জানান।
আগামীনিউজ/জনী