রূপগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এ বছর ইরি বোরো ধানের আবাদ গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি বছর প্রায় ১২ হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। আশানুরোপ ফলন হয়েছে। এ বছর ইরি বোরো ধানের আবাদ লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উপজেলার বেকার যুবকরা এখন শ্যালো মেশিনে ধান ভাঙ্গার চাকি হলার সংযোজন করে কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান ভাঙ্গানোর কাজ করছে। খামার পাড়া গ্রামের কৃষক সামছুল হক বলেন, এবার ধান কাটার শ্রমিকের সঙ্কট ছিল। বৃষ্টির কারণে ধান সেদ্ধ ও শুকাতে কষ্ট হয়েছে। তারপরও আমরা খুশি। কারণ এবার ফলন অনেক ভাল হয়েছে। বাড়ি বাড়ি এসে মেশিনে ধান ভাঙ্গিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। আর এতে করে উপজেলায় শ্যালো মেশিনে ধান ভাঙ্গানোর কদর বেড়েছে বেশ।
এভাবে ভ্রাম্যমান ধান ভাঙ্গানোর কাজ করে শতাধিক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ চালিত, ডিজেল চালিত ধান ভাঙ্গানোর মেশিন রয়েছে। কৃষক পরিবারের পুরুষেরা কৃষিকাজ এবং বাহিরের কাজে ব্যস্ত থাকায় ধানের বস্তা মাথায় নিয়ে গ্রাম-গঞ্জের ওইসব ধান ভাঙ্গানোর মিলে যাওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না বলে কৃষকেরা ভ্রাম্যমান ধান ভাঙ্গানোর মেশিনে চাল তৈরি করে নিচ্ছেন। বড়ালু এলাকার কৃষক জায়েদ হোসেন খন্দকার বলেন, কারেন্ট, ডিজেলের চেয়ে শ্যালো মেশিনে ধান ভাঙ্গাতে খরচ একটু বেশি পড়লেও পরিশ্রম কম ও সময় সাশ্রয় হচ্ছে। অনেক সময় কৃষাণিরাও সহজেই এ কাজটা করতে পারেন। তাই দিন দিন শ্যালো মেশিনে ধান ভাঙ্গানোর কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে রূপগঞ্জে কৃষক পরিবারগুলোর কাছে। সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এরকম দুই শতাধিক ধান ভাঙ্গানোর মেশিন রয়েছে।
এবছর ইরি বোরো মৌসুমে বেকার যুবকরা বিকল্প কর্মসংস্থান ধান ভাঙ্গানোর কাজ করে ভালই রোজগার করছেন। এছাড়া কৃষক পরিবারগুলো দুরের রাইস মিলে ভাঙ্গানোর জন্যে ধান আনা-নেয়ার বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা ও যানবাহনের খরচ সাশ্রয় পাচ্ছে। এ ব্যাপারে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের মাঝিনা এলাকার মনির হোসেন জানান, ধানের ভড়া মৌসুমে প্রতিদিন ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা রোজগার হচ্ছে।
তবে মৌসুম ছাড়া আয় রোজগার তেমন একটা হয় না। তখন গড়ে প্রতিদিন ৫শ’ থেকে ৭শ’ টাকা আয় হয়। অনেক বেকার যুবকরাই এখন এ কাজে আগ্রহী হয়ে ওঠছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেহা নুর বলেন, বাড়িতে গিয়ে ধান ভাঙ্গিয়ে দেয় বলে শ্যালো মেশিনে ধান ভাঙ্গানো রূপগঞ্জের কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। এতে ঝামেলা কম, সময় সাশ্রয় হচ্ছে এবং পরিশ্রমও কম হয়।
আগামীনিউজ/জনী